আবরার হত্যা মামলার ৪ আসামিকে হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

0
235

খুলনাটাইমস: বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পলাতক চার আসামিকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকার অন্যতম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম বিচারক মো. কায়সারুল ইসলাম গতকাল রোববার এ আদেশ দিয়েছেন। একই আদালতে মামলার আরেক আসামি মনিরুজ্জামান মনিরের স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদনও করা হয়েছে এদিন। আদালত পুলিশের সংশ্লষ্ট কর্মকর্তা এসআই মাঝহারুল ইসলাম বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর আদালত পলাতক চার আসামির সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়ে ৫ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছিল। কিন্তু আসামিদের ব্যক্তিগত কোনো মালামাল না থাকায় ক্রোক করা যায়নি। গতকাল রোববার শুনানি নিয়ে বিচারক আসামিদের আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। আগামি ১৩ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে। যাদের আদালতে হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- বুয়েটের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মাহমুদুল জিসান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের মুজতবা রাফিদ। বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন আবরারের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করে। পাঁচ সপ্তাহ তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে যে অভিযোগপত্র জমা দেন, সেখানে আসামি করা হয় মোট ২৫ জনকে। পরে ১৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক চার আসামিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করে। এ বিষয়ে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে পরোয়ানা তামিলের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এজাহারের বাইরের ছয়জন। গ্রেফতার হয়েছেন- বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, বহিষ্কৃত উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, বহিষ্কৃত সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মোজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, ইসতিয়াক হাসান মুন্না, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও আকাশ হোসেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, এস এম মাহমুদ সেতু। এজাহারের বাইরের ছয় আসামি হলেন-বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ এবং মাহামুদ সেতু। ‘স্বীকারোক্তি’ দিয়েছেন মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মোজাহিদুর রহমান, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর।
মনিরের স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন: মামলার আসামি মনিরুজ্জামান মনিরের পক্ষে গতকাল রোববার তার আইনজীবী স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেন বিচারক মো. কায়সারুল ইসলামের আদালতে। বিচারক আসামির সাক্ষর করিয়ে তা নথিভুক্তের আদেশ দিয়েছেন। গত ৯ অক্টোবর মনিরের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে মনির স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এর আগে মামলাটিতে গত ৩ ডিসেম্বর বহিষ্কৃত বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়নের পক্ষে তার আইনজীবী স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। আদালত তার আবেদনটিও নথিতে রাখার আদেশ দিয়েছে।