আজ বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস : মায়েদের সচেতনতার অভাবে বাড়ছে রোগী : প্রতি মাসে গড়ে ২ জনের মৃত্যু

0
1532

কামরুল হোসেন মনি:
মায়েদের সচেতনতার অভাবে শহরের চেয়ে গ্রামের শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। একটু সচেতনতা হলেই শিশুকে নিউমোনিয়ার হাত থেকে শিশু রক্ষা করা সম্ভব বলে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভিমত। ভাইরসা, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের মাধ্যমে এ রোগের সৃষ্টি হতে পারে। খুলনা শিশু হাসপাতালে গত দশ মাসে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ২১৪ শিশু চিকিৎসা দেয়া হয়। এরই মধ্যে মারা গেছে ২৩ শিশু। সে হিসেবে প্রতি মাসে গড়ে শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ত সংখ্যা ১২১ জন ও মারা যায় ২ জন এর বেশি শিশু।
আজ রোববার (১১ নভেম্বর) বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। ২০০৯ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এ উপলক্ষে খুলনায় কোন কর্মসূচি নেই সরকারি হাসপাতালগুলোতে।
খুলনা শিশু হাসপাতাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পযর্ন্ত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া ১ হাজার ২১৪ শিশুকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। এ সময় মারা যায় ২৩ শিশু। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ১৪৭ শিশুর মধ্যে মারা যায় ৪ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৯৭ শিশুর মধ্যে মারা যায় ২ জন। একই ভাবে মার্চ মাসে ১৮০ আক্রান্ত নিউমোনিয়া শিশুর মধ্যে মারা গেছে ২ জন, এপ্রিল মাসে ৫৯ শিশুর মধ্যে মারা যায় ১ জন, মে মাসে ৫৬ শিশুর মধ্যে মারা গেছে ১ জন, জুন মাসে ৫৫ শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ততের মধ্যে কেউ মারা যায়নি। জুলাই মাসে ৯৬ শিশুর মধ্যে মারা গেছে ১ জন, আগস্ট মাসে ১৩০ শিশুর মধ্যে মারা গেছে ৭জন, সেপ্টেম্বর মাসে ১৯৮ শিশুর মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয় এবং অক্টোবর মাসে ১৯৬ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এর মধ্যে মারা যায় ৩ শিশু। এছাড়া গত দশ মাসে ৪ হাজার ৫৩৫ শিশু ডায়ারিয়া আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
খুলনা শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ (এমও) এ প্রতিবেদককে বলেন, মায়েদের সচতেনতার অভাবে শহরের চেয়ে গ্রামের শিশুরা নিউমোনিয়ায় আকান্ত সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। মায়েরা একটু সচেতনতা হলেই শিশুকে এর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।  তিনি বলেন, এখন যে ভাবে শীত আসার কথা সেই ভাবে কিন্তু শীত মৌসুম সেভাবে এসে পারেনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মায়েরা অসেচতনতার কারণে এখনি কম্বল, কাথা দিয়ে শিশুকে ঢেকে রাখছে। এতে শিশুরা ঘামার কারণে সেই ঘাম শরীরের মধ্যে বসে যাচ্ছে। শরীরে ঘাম বসে যাওয়ায় শিশুদের ঠান্ডা লাগছে। তিনি বলেন, শীত মৌসুমের সময় ধুলোবালি বাতাসে বেশি ছড়ায়। যে পরিমান ধুলোবালি ও ব্যাকটেরিয়া বাতাসে আছে, তা শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসতন্ত্রে গিয়ে ইনফেকশন হতে পারে। আর শ্বাসতন্ত্রে ইনফেকশন থেকে নিউমোনিয়া হয়। মায়েদের বুকের দুধ শিশুদের সুইয়ে না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এতে বাচ্চারা নিঃশ্বাস নিতে কষ্টো হয়, ফলে ঝুকির মধ্যে থাকে শিশুরা। একটু বসে বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, কত সংখ্যাক শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে তা হাসপাতালে গেলে বোঝা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় এক মিলিয়ন শিশুরা মারা যায়, যা ম্যালেরিয়া, এইচআইভি এইডস ও হাম রোগের চেয়ে বেশি।