অন্য রকম আবহ তবু তো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা

0
446

অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের সবচেয়ে প্রার্থিত দ্বৈরথ বোধকরি এটিই। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার লড়াই বলে কথা। না-ই বা হলো তা বিশ্বকাপের মঞ্চে, কোপা আমেরিকার সূচি কিংবা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রতিযোগিতা! রোমাঞ্চ-উত্তেজনার তাতেও কমতি কী! পোশাকি নাম ‘প্রীতি ম্যাচ’ হলেও এ দুই প্রতিবেশী পরাশক্তির লড়াইয়ে বন্ধুত্বের সুবাস ছড়ায় কমই। শত্রুতার বাতাবরণে জয়ের তীব্র ইচ্ছা নিয়েই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয় পরস্পরের। আজ সৌদি আরবের কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটির লড়াইও এর ব্যতিক্রম নয়। শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপে গিয়েছিল দল দুটি। সে স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়ে আগেভাগে। ব্রাজিলের কোয়ার্টার ফাইনালে, আর্জেন্টিনার আরেক ধাপ আগে শেষ ষোলোতে। কিন্তু ওখানে আটকে থাকলে তো আর চলবে না। ইতিমধ্যেই চার বছর পরের বিশ্বকাপের চক্রে ঢুকে পড়েছে তারা। রাশিয়া-হতাশার পরের পর্বে এখন পর্যন্ত এগোচ্ছে ভালোই। কিন্তু আজকের মতো অগ্নিপরীক্ষা তো দিতে হয়নি কোনো দলকেই।

বিশ্বকাপ শেষের তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে ব্রাজিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের নাম যখন যুক্তরাষ্ট্র, এল সালভাদর ও সৌদি আরব—তখন আর সে জয়গুলোর মূল্য কতটা! আর্জেন্টিনার তিন ম্যাচে দুই জয় গুয়াতেমালা ও ইরাকের মতো দুর্বল দলের বিপক্ষে। কিছুটা শক্তিশালী কলম্বিয়ার মুখোমুখি হতেই আর জয় পায়নি। হারেওনি অবশ্য। আজকের ম্যাচ তাই দুই দলের জন্যই নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার, নিজেদের শক্তির জানান দেওয়ার উপলক্ষ। লড়াইয়ের ভেতর সে লড়াইয়ে রোমাঞ্চ ছড়াতে পারত লিওনেল মেসি ও নেইমারের দ্বৈরথ। দুই দেশের দুই সেরা খেলোয়াড়, তার ওপর বার্সেলোনায় সতীর্থ ছিলেন অনেক দিন। কিন্তু জাতীয় দলের জার্সিতে পরস্পরের মুখোমুখি আজ হচ্ছেন না তাঁরা। বিশ্বকাপ শেষে জাতীয় দল থেকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে যে গিয়েছেন মেসি! তাতে ব্রাজিলের আপাত লাভ বটে, তবে নেইমারের দুঃখটা থাকছে ঠিকই। সে কারণেই তো বলতে পারেন, ‘মেসির না থাকাটা ফুটবলের জন্য দুঃখের ব্যাপার। ও যত বেশি খেলবে, ফুটবলপ্রেমীদের জন্য ততই তা আনন্দের।’

মেসিহীন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত ব্রাজিল অধিনায়ক, ‘সতীর্থদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। বলেছি, এই ম্যাচটি আমাদের জন্য বিশেষ কেননা আর্জেন্টিনা আমাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। ওদের জাতীয় দলটি অসাধারণ, দুর্দান্ত সব ফুটবলার রয়েছে। ওদের মুখোমুখি হওয়াটা দারুণ ব্যাপার। কেননা এসব ম্যাচ ফুটবলের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দেয়।’ আর্জেন্টিনা খেলছে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ লিওনেল স্কালোনির অধীনে। ব্রাজিলের দায়িত্বে পুরনো কোচ আদেনর বাক্কি তিতেই। তবু ব্রাজিলও পালাবদলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি নেইমারের, ‘আমাদের দলে অনেক নতুন ফুটবলার এসেছে। প্রত্যেকেরই নিজস্ব দক্ষতা রয়েছে। আশা করছি, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সবাই আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারব।’

আজকের জয় সেই পালাবদলের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারে ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার। সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ হলেও চিরন্তন রোমাঞ্চের আহ্বান তো থাকছেই।