অধ্যাদেশে রাষ্ট্রপতির সই, ধর্ষণের শাস্তি এখন ম”ত্যুদ-

0
149

টাইমস ডেস্ক:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বো”চ শাস্তি বাড়িয়ে ম”ত্যুদ-ের বিধান রেখে অধ্যাদেশে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একের পর এক যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ আর বিােভের মধ্যে ‘জরুরি’ বিবেচনায় আইনটি সংশোধন করে তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারির জন্য এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি তাতে সই করেন বলে তার প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান। সংসদ অধিবেশন না থাকায় সরকার অধ্যাদেশ আকারে আইনটি জারি করল। সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এই অধ্যাদেশ উপ¯’াপন করতে হবে। আইনটি বলবৎ রাখতে চাইলে পরে বিল আকারে তা আনবে সরকার। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বো”চ শাস্তি এতদিন ছিল যাবজ্জীবন কারাদ-। আর ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর ম”ত্যু হলে বা দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বো”চ শাস্তি ম”ত্যুদ-। পাশাপাশি দুই েেত্রই রয়েছে অর্থ দ-ের বিধান। এ আইনে শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে ম”ত্যুদ-ের বিধান করার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে বিচার ও রায় কার্যকর করার জন্য আইন সংশোধনের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করা হ”িছল বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে। সম্প্রতি নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে তুলে নিয়ে ধর্ষণসহ দেশের বিভিন্ন ¯’ানে যৌন নিপীড়নের ঘটনার প্রোপটে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিােভে সেই দাবি আবারও জোরালো হয়ে ওঠে। মন্ত্রিসভায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপ-ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়। সেখানে এতদিন বলা ছিল- যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে, তাহলে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দ-িত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্ধদ-ে দ-িত হবেন। আইন সংশোধনে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘ম”ত্যুদ- বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-’ শব্দগুলো প্রতি¯’াপিত হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ এর ১ (গ) ধারায় যৌতুকের জন্য সাধারণ জখম করার ঘটনা আপসযোগ্য ছিল না। সংশোধনে সেটা আপসযোগ্য করা হয়েছে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন। এ আইনের মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সাত দিন থেকে এক মাস এবং মামলা নিষ্পত্তির জন্য একশ আশি দিন (ছয় মাস) সময় বেঁধে দেওয়া থাকলেও বাস্তবে ওই সময়ের মধ্যে রায় দেওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের এক একটি ঘটনা কিছু দিন পর পর সারা দেশকে নাড়া দিয়ে গেলেও এসব ঘটনার দ”ষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তির নজির কম। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ বছরে ধর্ষণের ঘটনায় ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার থেকে মামলা হয়েছে ৪ হাজার ৫৪১টি। এর মধ্যে আসামির শাস্তি হয়েছে মাত্র ৬০টি ঘটনায়। ধর্ষণের বেশিরভাগ মামলা বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় ধামাচাপা পড়ে যায়। তাছাড়া ঠিকমত ডাক্তারি পরীা না হওয়া, সামাজিক জড়তা, প্রভাবশালীদের হস্তপেসহ নানা কারণে বিচার পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। এসব কারণে শাস্তি বাড়ালেই এ ধরনের অপরাধ কমবে কি না, সেই প্রশ্নও আছে অনেকের মধ্যে। তাদের ভাষ্য, স্যা আইনের জটিলতা দূর করে বিচার পাওয়ার পথ সহজ করতে হবে। সেই সঙ্গে সামাজিকভাবে বিষয়টি মোকাবেলা করা জরুরি। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিশ্বাস, ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে ম”ত্যুদ- করায় এই অপরাধ কমে আসবে। আপনারা জানেন বিশ্বে ম”ত্যুদ-ের ব্যাপারে অনেক বিতর্ক আছে। তারপরেও আমাদের দেশে এই ঘ”ণ্য অপরাধটির যে চিত্র দেখতে পা”িছ, সে কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এটা বাড়ানো উচিত। সেই পরিপ্রেেিত আমরা ম”ত্যুদ-ের ব্যাপারটি সংশোধনীতে এনেছি।