তালায় ডিএসবি’র কনস্টেবল কতৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে লাঞ্ছিত,ক্ষমা চেয়ে রক্ষা!

0
862

পুলিশের লোক বলে কথা!

 

মোঃ রোকনুজ্জামান টিপু তালা,সাতক্ষীরা ::

সাতক্ষীরার তালায় জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) আলোচিত কনস্টেবল মনিরুজ্জামান (মনির) হাতে এবার লাঞ্ছিত হয়েছেন ঢাকা নর্থ সাউথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক ছাত্র মুনতাসির (২৪)। শনিবার (২৩ মে) ইফতারির ঠিক আগ মূহুর্তে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে মুনতাসিরের মামার বাড়ি উপজেলার জালালপুরের শ্রীমন্তকাটী নতুন বাজার এলাকায়।

করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব বিদ্যালয় ছুটির ফাঁকে তিনি মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। রমজানে রোজা ছিলেন। তাই বন্ধুদের সাথে পাশের বাজারে ইফতারি কেনার জন্য তাদের বাজারে আসা। তবে বিধি বাম! ভাজার দোকানে অবস্থানকালীণ সেখানে প্রবেশ করেন ডিএসবির কনস্টেবল মনিরুজ্জামান। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মেনে সাদা পোষাকের কনস্টেবল মনিরুজ্জামানকে সামান্য দূরে দাঁড়াতে বলায় বাধে বিপত্তি।

তিনি নিজের পরিচয় সম্পর্কে জাহির করেই কলার চেপে ধরেন মুনতাসিরের। এক পর্যায়ে শারীরিকভাবে উপর্যুপরি লাঞ্ছিত করেন তাকে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক এলাকাময় চাউর হওয়ায় উৎসুক জনতা ভীঁড় করেন সেখানে। বিষয়টি জানতে পেরেই তারা চড়াও হন মনিরুজ্জামানের প্রতি। তবে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌছে তাকে রক্ষা করেন। এক পর্যায়ে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে সেখান থেকে চলে যান তিনি।

খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, ঢাকা নর্থ সাউথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র মুনতাসির (২৪) করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় গত ২মাস নানা বাড়ী সাতপাকিয়ায় আবস্থান করেছিলেন তিনি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কয়েকে বন্ধু মিলে ইফতারি করতে বাজারে আসেন মুনতাসির। ইফতারির পূর্বে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ইফতারি কিনতে রাস্তার পাশে স্থানীয় জনৈক বিকাশের ভাজার দোকানে যান তিনি। এর কিছুক্ষন পরে ঐ একই দোকানে সাদা পোশাকে যান জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) কনস্টেবল মনিরুজ্জামান(মনির)। এসময় তিনি আগে ভাজা নেয়ার জন্য মুনতাসিরকে ধাক্কা-ধাক্কি শুরু করেন।

এসময় মুনতাসির তাকে সমাজিক দুরাত্ব বজায় রেখে দাড়াঁতে বলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মনিরুজামান তাকে ধাক্কা দিয়ে দুরে ঠেলে দেন। এসময় কারণ জানতে চাইলে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ হুমকি দিয়ে বলে আমাকে চিনিস? আমি পুলিশের লোক। তখন মুনতাসির তাকে উল্টো প্রশ্ন করেন, পুলিশের লোক বলে অন্যায় ভাবে মারবেন? একথা বলতেই ভাজা দোকানির খুটি হিসাবে ব্যবহৃত একটি বাঁশ তুলে মুনতাসিরকে মারতে উদ্যত হন তিনি। মনিরের ঔদত্যপূর্ণ চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।

খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরিস্থিতি সামলাতে নিজেকে রক্ষা করতে মনির উপস্থিতিদের উদ্দেশ্যে দু’হাত উঁচু করে ক্ষমা চেয়ে কোন রকম ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সংশ্লিষ্ট ভাজা দোকানি বিকাশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ডিএসবি’র দারোগা পরিচয়ধারী সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে চলে গেছেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভূক্তভোগীরা জানান,কোথাও কোন ঘটনা ঘটলেই মনিরুজ্জামান সেখানে পৌছে চাঁদা আদায় করেন। বিভিন্ন সময় মামলার ভয় দেখিয়ে উৎকোচ আদায় তার নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বিভিন্ন স্তরে তার বহু সোর্স রয়েছে। যাদেও মাধ্যমে ঘটনার গোপন খবর ও মধ্যস্থতা করেন তিনি। এমন কোন এলাকা কিংবা সেখানকার ঘটনা নেই যে,তিনি সেখান থেকে অবৈধ সুবিধা নেননা। লোকাল সাংবাদিকদের কতিপয় সদস্যরাও তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। সার্বক্ষণিক তার নিজস্ব বাইকে চেপে থাকেন বিরোধী দলীয় চিহ্নিত জনৈক নেতা। সর্বশেষ ২৩ মে’র ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন এলাকার ভূক্তভোগীরা। তারা তদন্তপূর্বক মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানান।

এব্যাপারে ডিএসবি’র কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের কাছে ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে উল্টো হুমকি দিয়ে বলেন,সে কৈফিয়ৎ কি আমি তোকে দিব ?