৪ দিন ধরে প্লাবিত হচ্ছে সুন্দরবনের দুবলার চর ও করমজলসহ গোটা বনাঞ্চল

0
83
৪ দিন ধরে প্লাবিত হচ্ছে সুন্দরবনের দুবলার চর ও করমজলসহ গোটা বনাঞ্চল

মোঃ এনামুল হক, মোংলা:
বৈরী আবহাওয়া ও চলতি পূর্ণিমার প্রভাবে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট উচ্চতার অধিক জ্বলোচ্ছাসে প্লাবিত হচ্ছে সুন্দরবন। টানা ৪দিন ধরে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলাচ্ছে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের দুবলার চর ও দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র এবং পর্যটন কেন্দ্র করমজল। এতে এখনও পর্যন্ত বনবিভাগের কোন স্থাপনার তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে বিশাল বনজুড়ে কোথাও কোন বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত জানাতে পারেনি বনবিভাগ।

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলে পল্লীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশিদ জানান, নিম্নচাপ-লঘুচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের তুলনায় সাগরে জোয়ারের পানি অনেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে অস্বাভাবিক জোয়ারে দুবলার চরে ৫/৬ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সুন্দরবনের অভ্যন্তরে কোথাও ২ফুট আবার কোথাও কোথাও কম-বেশি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ভাটা হলে আবার পানি নেমে যাচ্ছে। তবে এ জ্বলোচ্ছাসে দুবলার কোথাও এখনও পর্যন্ত কোন ক্ষয়ক্ষতি তার নজরে আসেনি।
এদিকে চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির জানান, ৪দিন ধরে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে করমজল। করমজলের রাস্তার উপরে দেড় ফুট, আর বনের অভ্যন্তরে ৩/৪ফুট উচ্চতার জ্বলোচ্ছাসে প্লাবিত হচ্ছে। পূর্ণিমার গোনে সাধারণত জোয়ারের পানি বেড়ে থাকে। কিন্তু এবার মুলত সাগরে নিম্নচাপ-লঘুচাপের প্রভাবের কারণে পানির চাপও বেড়েছে। তিনি বলেন, পানি বাড়লেও বনের ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি। এখনও পর্যন্ত করমজলে কুমির, কচ্ছপ, হরিণ ও বানরসহ অন্যান্য প্রাণী নিরাপদে রয়েছে।
জ্বলোচ্ছাসে প্লাবিত হচ্ছে দুবলা ও করমজল ছাড়াও বিশাল বনাঞ্চল। তবে এতে বিশেষ করে বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির আশংকা তেমন একটা নেই বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় (বাগেরহাট) বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি মাথায় রেখেই বনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন জায়গায় উচু টিলা তৈরি করা হয়েছে। যাতে বনে পানি বাড়লে বন্যপ্রাণীগুলো সে সকল উচু টিলায় আশ্রয় নিতে পারে। টিলার সুফলে এর আগেও বনের অভ্যন্তরে স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় কয়েক ফুট পানি বৃদ্ধি পেলেও তখন কোন প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেও জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, সাগরের নিম্নচাপ-লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত ও পূর্ণিমার গোনের কারণের মোংলা বন্দরের পশুর নদীর পানি স্বাভাবিকের তুলনায় দুই ফুটের অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি কমলে এবং পূর্ণিমার গোন শেষ হলে এ পানির চাপ কমে যাবে বলে জানান তিনি।