৪৪ মামলায় চার্জশিট দেয়ার প্রতিবাদে খুলনায় বিএনপির স্মারকলিপি পেশ

0
388

নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে ৪৪ মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়ার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ স্মারকলিপি দেয় মহানগর বিএনপি।
এতে বলা হয়, স¤প্রতি খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) মহানগরের ৮ থানায় বিগত সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে ২০টি গায়েবিসহ ২৪টি নির্বাচনকালীন মোট ৪৪টি ‘মিথ্যা মামলায়’ অভিযোগপত্র দিয়েছে। এসব ‘মিথ্যা মামলার’ অভিযোগপত্রসহ খুলনা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গত দশ বছরে দায়ের করা ১১০টি মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছে বিএনপি।
২০১৮ সালের ১৫ মে ও ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সময় একই বছরে খুলনা মহানগর পুলিশ ৮ থানায় অর্ধশতাধিক ‘মিথ্যা মামলা’ দায়ের করে। এর বেশির ভাগ মামলাই অত্যন্ত গোপনে অপরাধ সংগঠন ছাড়াই দায়ের করে রাখে। যা বিএনপি মাসখানিক পরে জানতে পারে। মামলা করা হয়েছিলো একটি সুপরিকল্পিত লক্ষ্যকে সামনে রেখে তা হলো নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে সরকারি দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মাঠ পর্যায়ে নেতাকর্মীদের এলাকা ছাড়া করা। এছাড়া নির্বাচন চলাকালীন নির্বাচন কমিশনের বিধি বিধান লঙ্ঘন করে বেশকিছু মামলা করা হয়েছিল, যা ছিলো নির্বাচনী আইনের পরিপন্থি। ৪৪ গায়েবি ও মিথ্যা মামলায় মেয়র ও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী, খুলনা-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট, খুলনা মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতারা, সব থানা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর, অঙ্গসংগঠনের মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা, মহিলা দল নেত্রী ও পুলিং এজেন্ট ট্রেনিং প্রোগ্রামের ট্রেইনার, পুলিং এজেন্ট, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধানরা, এমনকি বিএনটির অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী সম্ভাব্য প্রার্থী সার্ভে করতে আসা দুইজন সদস্যকে একটি আবাসিক হোটেল থেকে গ্রেফতার করে সরকারের বিরুদ্ধে কথিত ষড়যন্ত্রের মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি প্রধানদের আসামি করা হয়েছিলো।
আরও বলা হয়, নির্বাচন কার্যক্রম চলাকালীন প্রত্যহ গ্রেফতার করা হয়েছিল, গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে নেতাকর্মীদের এলাকা ছাড়া করা হয়েছিল। নির্বাচনের একমাসে গ্রেফতার নেতাকর্মীর সংখ্যা ছিলো এক হাজারেরও বেশি। ৪৪ ‘মিথ্যা মামলায়’ আসামির সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। কয়েকটি মামলায় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে দেড় মাসের মাথায় অভিযোগপত্র দিয়ে ওয়ারেন্ট বের করে গ্রেফতার অভিযান চালানো হয়েছিল। সদর থানার একটি মামলা দাখিলের সময় আসামির সংখ্যা ২২জন থাকলেও সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের ৭দিন আগে সেই মামলায় ১৫৮ জনের নামে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল, চার্জভুক্ত আসামিরা সব ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। গত দেড় বছরে ৪৪ মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়ে সর্বশান্ত হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। অমানবিক জীবন-যাপন করতে হয়েছে সবাইকে, কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে বিনা কারণে। প্রত্যেকটি বিএনপি পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
সরকারের প্রতি বিএনপির আহŸান একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে বাঁধাহীনভাবে রাজনীতি করার সাংবিধানিক সুযোগ দিন। বিএনপির বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার করুন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, এড. বজুলর রহমান, শেখ ইকবাল হোসেন, শাহ্জালাল বাবলু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, সিরাজুল হক নান্নু, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দীপু, শাহিনুর ইসলাম পাখী, আজিজুল হাসান দুলু, এড. গোলাম মওলা, জালু মিয়া, সাদিকুর রহমান সবুজ, শেখ সাদী, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ আহসান পরাগ, সাজ্জাত হোসেন তোতন, মুর্শিদ কামাল, কেএম হুমায়ুন কবির, একরামুল হক হেলাল, হাসানুর রশিদ মিরাজ, শামসুজ্জামান চঞ্চল, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, শরিফুল ইসলাম বাবু, নাজির উদ্দিন নান্নু, জামিরুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম রবি, নেইমুল হাসান নেইম, মেহেদী মাসুদ সেন্টু, বাচ্চু মীর, মোস্তফা কামাল, কাজী মাহমুদ আলী, ময়েজউদ্দীন চুন্নু, মনিরুল ইসলাম।