১০ হাজার টাকার জন্য সাত বছরের শিশুকে হত্যা, গ্রেফতার ৩

0
357

টাইমস্ ডেস্ক:

নরসিংদীর রায়পুরায় ১০ হাজার টাকার জন্য সাত বছরের শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। প্রবাসী সুজন মিয়ার ডিপোজিট করে রাখা টাকার প্রতি লোভ থেকেই তার শিশুপুত্র মামুনকে অপহরণ করা হয়েছিল। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ক্ষোভে সাত বছরের মামুন মিয়াকে দুই দিন অভুক্ত রেখে মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে ও গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এই পরিকল্পনায় ছিলেন সুজন মিয়ার জেঠাতো ভাই জয়নাল মাস্টার।তিনি তার ছেলে আরমান, নাতি জিদান আর ভাড়া করা সন্ত্রাসী নাসিরের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। হত্যাকাণ্ড ঘটাতে কিলারের সঙ্গে ১০ হাজার টাকা রফাদফা হয়। বুধবার দুপুরে নরসিংদীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিউর রহমান, গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ জানায়, রায়পুরা উপজেলার হাসিমপুর এলাকার সুজন মিয়ার ছোট ছেলে মামুন মিয়া গত ২০ জুন বিকেলে বাড়ির সামনের রাস্তায় খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে দফায় দফায় বিভিন্ন কৌশলে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ বাবদ ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরই মধ্যে নিখোঁজের তিন দিন পর প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় মামুনের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্ত ভার থানা থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। হত্যায় জড়িত সন্দেহে প্রযুক্তির সহায়তায় জয়নাল মাস্টার, তার ছেলে আরমানকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাদের দেয়া ত্যথ্যের ভিত্তিতে রাজনগর এলাকার নাসির মিয়াকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাসির হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন। একইসঙ্গে হত্যার নেপথ্যের বিষয়ে বিবরণ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুল গাফফার বলেন, অভিযুক্ত জয়নাল মাস্টার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। সে মূলত কোনো এজেন্সির হয়ে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করে। নিহত মামুনের বাবা সুজন মিয়াকে জয়নাল মাস্টারই সৌদি আরবে পাঠিয়েছিল। এমনকি সুজন মিয়াও বিদেশ থেকে সব টাকা-পয়সা সুজন মিয়ার মাধ্যমে দেশে পাঠিয়েছে। সুজন মিয়া দেশে ফিরে সব টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখে। সেই টাকার লোভেই নিজের ছেলে আরমান এবং নাতি নরসিংদী মডেল কলেজের শিক্ষার্থী জিদান ও লিমনকে দিয়ে নাসিরকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করে অপহরণ করা হয় শিশু মামুনকে। নাসিরের মাধ্যমে সুজনের ফোনে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এসআই গাফফার বলেন, টাকা না পেয়ে জয়নাল মাস্টারের পরিকল্পনামাফিক শিশু মামুনকে দুই দিন অভুক্ত রেখে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে পরিকল্পনামাফিক নিজের বাড়ির ছাদে মরদেহ ফেলে রাখে জয়নাল। যাতে কেউ তাকে সন্দেহ করতে না পারে। নাসিরের দেয়া তথ্যে জয়নাল মাস্টার, আরমান ও নাসিরকে গ্রেফতার করা হয়। তবে জিদান ও লিমন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান এসআই গাফফার।