হাজার কোটি টাকার তহবিল হচ্ছে সিনেমা শিল্পের উন্নয়নে

0
199

টাইমস বিনোদন:
বন্ধ সিনেমা হল চালু, সংস্কার ও নতুন হল তৈরির জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দিতে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী কয়েক বছর পর সিনেমা শিল্পে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে। বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হল চালু, চলমান হলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়ন করাসহ অনেক নতুন সিনেমাহল গড়ে উঠবে।’ রোববার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই বাংলাদেশে জাতীয় চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫৭ সালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই শিল্পের উন্নয়নের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে দেখেছেন- সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধ সিনেমা হল চালু, সংস্কার ও নতুন সিনেমাহল তৈরি করার জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়।’ তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র পৃথিবীর অত্যন্ত পুরনো একটি মাধ্যম। যে মাধ্যম জীবনের ও সমসাময়িক কথা বলে। মানুষকে আনন্দ দেয়, সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরে, মানুষের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্রের অনেক কিছু চলচ্চিত্রের মাধ্যমে উঠে আসে। চলচ্চিত্র সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। সমসাময়িকালেও চলচ্চিত্র সংরক্ষণ করে। চলচ্চিত্রই সর্বোত্তম মাধ্যম যা মানুষকে হাসি, কান্না, বেদনা ও আনন্দ দেয়ার মাধ্যমে সমাজকে পরিশুদ্ধ করে এবং সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।’ হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশের চলচ্চিত্র স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী আমাদের যুব সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে এ মাধ্যম। এ ছাড়া অনেক কালজয়ী শিল্পীর জন্ম দিয়েছে, কালজয়ী চলচ্চিত্রের জন্ম দিয়েছে। সুতরাং এই ইনস্টিটিউট থেকে যারা পাস করে বের হচ্ছে তারাও একদিন কালজয়ী শিল্পী হবে। তারাও দেশ ও সমাজকে অনেক কিছু দিতে পারবেন।’ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সিনেমা ও টেলিভিশনের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে এক ও দুই বছরের কোর্স করানো হয়। এ ছাড়া এখানে কিছু শর্ট কোর্সও করা হয়। যারা টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত আছেন তারা করতে পারেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘এই ইনস্টিটিউট থেকে যারা বিভিন্ন কোর্স সম্পন্ন করে বের হচ্ছেন তারা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছেন। অনেকেই এনজিও, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। সারাদেশ থেকে এখানে ছেলে মেয়েরা আসে। যারা এখানে কোর্স করে তাদের কিছু শর্টফিল্ম বানানোর জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হয়। এই ফিল্ম নির্মাণের জন্য সরকার ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেয়। যারা কোর্স করে তাদের এটা দেয়া হয়। এখানকার অনেক শর্টফিল্ম জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য এই প্রতিষ্ঠানকে একটি আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়া।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ থেকে পুনা ইনস্টিটিউটে অনেকেই গেছেন- সেখান থেকে তারা পাস করে এসেছেন। তাই আমাদের দেশেই এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি যেখানে আমাদের ছেলে মেয়েসহ বিদেশ থেকেও আসার সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা দেখতে পারব বিদেশ থেকে এসে ছেলে মেয়েরা এখান থেকে কোর্স করছে, পাস করে গিয়ে স্ব-স্ব দেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। তাই এই প্রতিষ্ঠানকে আরও কীভাবে উন্নত করা যায় বা কী কী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন- সে বিষয়গুলো আজকে আমরা আলোচনা করেছি।’ কবে থেকে সিনেমা হল খোলা হবে- জবাবে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। করোনা পরিস্থিতি তো যায়নি। এখনও প্রতিদিন ৩০ এর কাছাকাছি মৃত্যু হচ্ছে, যদিও আগের স্বাভাবিক অবস্থার মতো গণপরিবহন, অফিস-আদালত চালু হয়েছে। এ বিষয়গুলো আরেকটু পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য তো সিনেমা হল বন্ধ রাখা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং দূরত্ব বজায় রেখে, আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাস করে চালু করা যায় কি না- আমরা এ সপ্তাহের মধ্যে বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কত তারিখ থেকে খোলা যায় সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’