সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন

0
777

লায়ন মো: গনি মিয়া বাবুল
সড়ক দুর্ঘটনা সকলের কাছে এক আতঙ্কের নাম। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ হতাহত হচ্ছে।
সড়কের মড়কে খালি হচ্ছে হাজারো মায়ের কোল। সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমান সময়ে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা, যা বেদনাদায়ক ও অনাকাঙ্খিত। সরকারের একার পক্ষে সড়ক দুর্ঘনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সড়ক দুর্ঘনা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
গণমাধ্যম, সুশীলসমাজ, বিভিন্ন সংগঠন, এনজিও, ছাত্রসমাজ, যাত্রী, চালক, পথচারীসহ সকলকে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। তবে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উদ্যোগ সরকারই নিতে পারে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আইন ও বিধি-বিধান রয়েছে, কিন্তু এসব আইনের যথেষ্ট প্রয়োগ নেই। আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের আরো কঠোর হওয়া উচিত। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সর্বপ্রথম সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো খতিয়ে বের করা আবশ্যক। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো হচ্ছে, সচেতনতার অভাব, অদক্ষ ও অশিক্ষিত চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব, যাত্রী ও পথচারীদের অসচেতনতা, দুর্নীতি, চলন্ত অবস্থায় চালকের মোবাইল ফোন ব্যবহার, অপরিকল্পিত ও ভঙ্গুর সড়ক, ওভারক্রসিং, অতিরিক্ত গতি, ওভারব্রিজের স্বল্পতা, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ট্রাফিক পুলিশের গাফিলতি, অনিয়ম, লাইসেন্সবিহীন গাড়ি ও চালক এবং বেপরোয়া গাড়ি চালানো। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। গণমাধ্যম এই বিষয়ে সহায়ক ও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে গণমাধ্যমকে দক্ষতার সাথে আরো অধিক বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২৫জুন ২০১৮ তারিখে ছয়টি নির্দেশনা এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আরো ১৭টি নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় অদ্যাবধি এই সকল নির্দেশনার কার্যকর বাস্তবায়ন পরিলক্ষিত হয়নি। এই নির্দেশনা গুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রীর ছয়টি নির্দেশনা হলো ঃ গাড়ির চালক ও তার সহকারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, লং ড্রাইভের সময় বিকল্প চালক রাখা, যাতে পাঁচঘন্টার বেশি কোনো চালককে একটানা দূরপাল্লায় গাড়ি চালাতে না হয়। নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর সড়কের পাশে সার্ভিস সেন্টার বা বিশ্রামাগার তৈরি করা। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাস্তা পারাপার বন্ধ করা। সড়কে যাতে সবাই সিগন্যাল মেনে চলে-তা নিশ্চিত করা। পথচারী পারাপারে জেব্রাক্রসিং ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্ট বাঁধার বিষয়টি নিশ্চিত করা। এছাড়া ১৬ আগস্ট ২০১৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে ট্রাফিক ব্যব্যস্থার উন্নয়ন বিষয়ক এক সভায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১৭টি নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ঢাকা শহরে চলমান সব গণপরিবহন, শহরে চলাকালে সব সময় দরজা বন্ধ রাখা এবং বাস স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠা-নামা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়।
২. একই সময়ের মধ্যে গণপরিবহনে (বিশেষত বাসে) দৃশ্যমান দু’টি স্থানে চালক এবং হেলপারের ছবিসহ নাম, চালকের লাইসেন্স নম্বর, মোবাইল নম্বর প্রদর্শন নিশ্চিত করা।
৩. সব মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীকে (সর্বোচ্চ দু’জন আরোহী) বাধ্যতামূলক হেলমেট পরিধান এবং সিগনালসহ সব ট্রাফিক আইন মানতে বাধ্য করা।
৪. সব সড়কে বিশেষত মহাসড়কে চলমান সব পরিবহনে (বিশেষত দূর পাল্লার বাসে) চালক এবং যাত্রীর সিট বেল্ট ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া এবং পরিবহনসমূহকে সিট বেল্ট সংযোজনের নির্দেশনা দেওয়া এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া।
৫. ঢাকা শহরের যেসব স্থানে ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাস রয়েছে সেসব স্থানের উভয় পাশে ১শ’ মিটারের মধ্যে রাস্তা পারাপার সম্পূর্ণ বন্ধ করা। প্রয়োজনে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাগরিকদের ধন্যবাদ কিংবা প্রশংসাসূচক সম্বোধনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
৬. ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাসসমূহে প্রয়োজনীয় পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আন্ডারপাসসমূহে প্রয়োজনীয় লাইট, সিসিটিভি স্থাপনাসমূহ ব্যবহার করা।
৭. ঢাকা শহরের সব সড়কে জেব্রা ক্রসিং ও রোড সাইন দৃশ্যমান করা, ফুটপাত হকার মুক্ত রাখা, অবৈধ পার্কিং এবং স্থাপনা উচ্ছেদ করা, সব সড়কের নাম ফলক দৃশ্যমান স্থানে সংযোজনের নির্দেশ দেয়া হয়।
৮. ট্রাফিক সপ্তাহে চলমান সব কার্যক্রমসমূহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত যথাসম্ভব অব্যহত রাখা।
৯. স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুৎতিক সিগনাল ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
১০. একই সময়ে ঢাকা শহরে রিমোট কন্ট্রোলড অটোমেটিক বৈদ্যুতিক সিগনালিং পদ্ধতি চালু করার নির্দেশ দেয়া হয়।
১১. ঢাকা শহরের সব সড়কের রোড ডিভাইডারের উচ্চতা বৃদ্ধি করে বা স্থানের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ।
১২. মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত (আপ এবং ডাউনে) ন্যূনতম দু’টি স্থানে স্থায়ী মোবাইল কোর্ট বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং প্রতিনিয়ত দৈব চয়নের ভিত্তিতে যানবাহনের ফিটনেস এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করা। শহরের অন্য সব স্থানেও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী অস্থায়ীভাবে অনুরূপ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১৩. ঢাকা শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি বা আরম্ভ হবার সময় অপেক্ষাকৃত জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী, স্কাউট এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সহযোগিতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারের উদ্যোগ নিতে হবে।
১৪. অবৈধ পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ফিটনেস দেওয়ার প্রক্রিয়াতে অবশ্যই পরিবহন দেখে ফলপ্রসূ ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৫. রুট পারমিট/ফিটনেস বিহীন যানবাহনসমূহকে দ্রুত ধ্বংস করার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে।
১৬. লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। এক্ষেত্রে ‘লারনার’ দেওয়ার প্রাক্কালে ড্রাইভিং টেস্ট নেয়া যেতে পারে এবং উত্তীর্ণদের দ্রুততম সময়ে লাইসেন্স দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
১৭. কর্মকর্তা/কর্মচারীর ঘাটতি থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়।
উপরোক্ত নির্দেশনাগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন হলে সড়ক দুর্ঘটনা নিশ্চিত কমে আসবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালক যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা অপরিহার্য। ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ১৯৯৩ সালে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গঠিত হয় নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সংগঠনের। সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠিত নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) তার কার্যক্রমের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থনে ধন্য হয়ে ওঠে। নিরাপদ সড়ক চাই প্রতিষ্ঠার এই ২৬ বছরের মধ্যে জনকল্যাণমুখী সংগঠন হিসেবে তার ব্যাপক কর্মতৎপরতায় দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেয়ে গেছে যথেষ্ট পরিচিতি। বর্তমানে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) একটি সফল সামাজিক আন্দোলনের নাম। উল্লেখ্য যে ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মর্মান্তিকভাবে নিহত হন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। সড়কের মড়ক থেকে জাতিকে উদ্ধারের জন্য চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ২৬ বছর যাবত এই সংগঠনের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন, যা সকল মহলে প্রশংসিত হচ্ছে। এই সংগঠনের মাধ্যমে সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় রাষ্ট্র ২০১৮ সালে জনাব ইলিয়াস কাঞ্চনকে একুশে পদক প্রদান করেন।
সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবিতে সোচ্চার নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর পক্ষ থেকে প্রতিবছর ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালনের দাবি উত্থাপন করা হয় এবং প্রতি বছর সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দিনটিকে নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালন করা হতে থাকে। নিসচার দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রী সভার বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহন ও অনুমোদন করা হয়। ফলে ২০১৭ সাল থেকে ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে সরকারি উদ্যোগে জাতীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে। এ বছর তৃতীয়বারের মতো ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হয়। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়”। দিবসটি উপলক্ষে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। সরকারিভাবে রাজধানীসহ প্রতি জেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সকাল ৭টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এর বিআরটিএর উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়। সকাল ১০টায় ঢাকার খামারবাড়িস্থ বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফিটনেসবিহীন যান চলাচল এবং ওভারটেকিংয়ের মত অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওভারটেকিং নামক অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং ফিটসেসবিহীন গাড়ি সড়কে চালানো দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি অহেতুক নিয়মের বাইরে গিয়ে গাড়ি বা ট্রাকের আকার পরিবর্তন করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ট্রাফিক পুলিশকেও এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ড্রাইভারদেরও দোষ রয়েছে, কোন গাড়ি তাদের ওভারটেক করলে যেন মাথা খারাপ হয়ে যায়, ঐ গাড়িকে তাদেরও ওভার টেক করতেই হবে। ফলে, দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।’
তিনি বলেন, একটি রাস্তা কেমন লোড নিতে পারে, একটি সড়কে কি ধরনের দু’টি গাড়ি পাশাপাশি চলতে পারে তার একটি আকার নির্দিষ্ট করা থাকে। অথচ, আমাদের দেশে দেখা যায় অধিক মুনাফার আশায় আসন বৃদ্ধির জন্য বা অতিরিক্ত মালামাল পরিবহনের জন্য ক্ষেত্রে বিশেষে এক্সট্রা ক্লাম দিয়ে দু’পাশে বেআইনীভাবে গাড়ির আকার বাড়িয়ে নিচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে।’
অতীতে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তৈরি করা এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গৃহীত হলেও পরবর্তীতে তা থেমে যাওয়ার আবার তা শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, ষড়ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তন এবং নতুন ঋতু আগমনের সঙ্গে সঙ্গে অতীতের বিষয়গুলো ভুলে যাওয়ার মত বৈশিষ্ট্য আমাদের মানসিকতায় রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রীর উপরোক্ত বক্তব্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও যুক্তিসম্মত। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এসব কথা কার্যকর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করছি।

বর্তমান পর্যায়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর কার্যক্রম যেমন সাফল্যের মুখ দেখেছে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর কার্যক্রম আরও প্রসারিত ও গতিশীল করে তোলার বিষয়টিও হয়ে উঠছে জরুরি। সঙ্গত কারণেই আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টিও হয়ে উঠছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কার্যক্রম পরিচালনায় আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে নিসচা সমাজকল্যাণ অধিদফতর ও এনজিও ব্যুরোর অনুমোদন পেয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সড়কের সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হোক আমাদের স্বদেশ। মুক্ত হোক সারা পৃথিবী। সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ চাই। চাই সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত পৃথিবী।