সিলেটের আ. লীগ নেতাদের কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে বৈঠক

0
165

টাইমস ডেস্ক:
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে গৃহবধূকে ছাত্রলীগ কর্মীদের গণধর্ষণ ও সিলেট আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি কমিটি দেয়া নিয়ে কেন্দ্রে ডেকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় দলের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক নেতা জানান, গত বৃহস্পতিবার মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথমে বৈঠক করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনের সঙ্গে। তারা বের হওয়ার পরপরই জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের কেন্দ্রীয় এই যুগ্ম সম্পাদক। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। ১২৮ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নবদম্পতিকে তুলে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণের মতো ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নাম আশায় এবং এই বিতর্কিত নেতাকর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে দুজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম আশায় ক্ষুব্ধ হন দলের হাই কমান্ড। এমন মনোভাব প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকা- ঠেকাতে বেশ কিছু দিক নির্দেশনা দেয়া হয় ওই বৈঠকে। এছাড়া সিলেট আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া নিয়ে কেন্দ্রে যাওয়া কিছু অভিযোগের ব্যাপারে আলোচনা হয় এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথাবার্তা হয়। পাশাপাশি জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার জন্য দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করার কথা জানিয়ে ঘণ্টাব্যাপী চলা এ বৈঠক শেষ হয়। ঢাকায় বৈঠকের বিষয়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জানান, গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণকা-, দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির অনুমোদন ও বাদপড়াদের পাল্টা অবস্থান বিষয়ে নাসির বলেন, আমরা কমিটির তালিকা জমা দিয়েছি, বাকিটা এখন দলীয় হাই-কমান্ডের হাতে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন কমিটি অনুমোদন দেবেন তখনই জানা যাবে। উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া তালিকা কেন্দ্রীয় দফতরে জমা দেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এরপর কাক্সিক্ষত পদ না পাওয়া, বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা তালিকা থেকে বাদ পড়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুটি শাখারই কমিটি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে নানা অভিযোগ জমা দেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী। আর এ কারণেই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের খসড়া কমিটির অনুমোদন পেতে বিলম্ব হচ্ছে। অভিযোগ আছে প্রয়াত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের জ্যেষ্ঠ ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আরমান আহমদ শিপলু মহানগর কমিটিতে ঢোকার আগ্রহ প্রকাশ করার পরও তাকে ওই কমিটিতে নেয়া হয়নি। নগরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও তাকে জেলা আওয়ামী লীগের খসড়া কমিটিতে তার নাম গেছে। শিপলুর ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন বাবা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকায় তিনি জেলা কমিটিতে ছিলেন। কিন্তু কামরান করোনায় মারা যাওয়ার পর তার ছেলে শিপলু নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগ্রহের কথা নগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানানোর পরও তাকে ওই কমিটিতে রাখা হয়নি। এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবদুল খালিক, নগর আওয়ামী লীগের নেতা, সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাস, তপন মিত্র, প্রিন্স বদরুজ্জামানসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি। এসব ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দু’সপ্তাহ আগে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ‘ত্যাগী নেতাকর্মীদের’ পৃথক দুটি খসড়া তালিকা দলের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদকের কাছে জমা দেন। এরপরই সিলেটের ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের ভেতরকার দ্বন্দ্ব আর কোন্দল প্রকাশ্যে আসে।