সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে ২০ কোটি টাকা টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ

0
505

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন ঠিকাদাররা। এ ঘটনায় তারা নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী সরোয়ার হোসেন, এস্টিমেটর অমল রায় ও কম্পিউটার অপারেটর ইমরানের প্রত্যাহারের দাবি করেছেন।
রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সাতক্ষীরার ঠিকাদাররা। ঠিকাদার খন্দকার আলি হায়দার লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঠিকাদার মো. রুহুল আমিন, সৈয়দ হারিজ হোসেন, মো. শাহেদুজ্জামান, অসীম কুমার দাস, বাদল, আবদুল হালিম, কাজল প্রমুখ।
ঠিকাদাররা জানান, খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট প্রকল্পের তিনটি আইডি ও অগ্রাধিকারমূলক পানি সরবরাহ প্রকল্পের ৮টি টেন্ডার আহবান করা হয়। তারা বলেন, ঠিকাদার হিসেবে এসব আইডির মূল্য রেট জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে খুলনায় প্রকল্প পরিচালক (পিডি) অফিসে যোগাযোগ করার কথা বলেন। যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকেও একই কথা বলা হয়। তারা বলেন, মূল্য রেট না পেয়ে তারা নিজেদের মতো করে দরপত্র জমা দেন। টেন্ডার ওপেনিংয়ের পর দেখা যায় নির্বাহী প্রকৌশলী তার খয়েরখাঁ দুই তিনজন ঠিকাদারের রেট ১০% নি¤œদরে মিলিয়ে দিয়েছেন। প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, সাতক্ষীরার ঠিকাদাররা রেট না পেলেও নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রিয়ভাজন লোকজন কিভাবে তা পেলেন। এ কাজে মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে অভিযোগ করে তারা বলেন এর সাথে জড়িত রয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম ছাড়াও সরোয়ার হোসেন, অমল রায়, ইমরানসহ অফিসের কয়েকজন। তারা অভিযোগ করে বলেন, কম্পিউটার অপারেটর ইমরানের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা শতকরা ১০ টাকা হিসেবে অবৈধ টাকা নিয়ে কার্যাদেশ দিয়ে আসছেন। অভিযোগে তারা আরও বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট প্রকল্পে পাঁচটি টেন্ডার আইডিতে ১২ জন ঠিকাদার অংশগ্রহণ করেন। ওই পাঁচটি টেন্ডারের বিপরীতে ত্রিশ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করে দুই তিনজন ঠিকাদারকে সাত কোটি টাকার কার্যাদেশ দিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। এর মধ্যে চারটি আইডির কাজ তার নিজের মনোনীত ঠিকাদারকে দিয়েছেন। অভিযোগ করে ঠিকাদাররা বলেন, প্রিয়ভাজন ঠিকাদারদের সাথে নির্বাহী প্রকৌশলীর গোপন ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। আরেকটি টেন্ডারের পাইপলাইন কাজ মোটা টাকার বিনিময়ে তিনি ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স লাইসেন্সে কাজ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রেও মোটা টাকা ঘুষ নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যাদেশ দিয়েছেন বলে জানান তারা।
ঠিকাদাররা আরও বলেন, টেন্ডার ওপেন করা হলেও তিনি তা সর্বসাধারনের অগোচরে রাখার চেষ্টা করে থাকেন। এর ফলে বঞ্চিত ঠিকাদারা কে কত রেট দিলেন কিংবা কে কাজ পাচ্ছেন না পাচ্ছেন তা জানতে পারেন না সাধারণ ঠিকাদাররা।
অবিলম্বে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, সহকারী মো. সরোয়ার হোসেন, এস্টিমেটর অমল রায় ও কম্পিউটার অপারেটর ইমরানকে দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড এবং তাদের প্রত্যাহারের দাবি জানান ঠিকাদাররা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, যা কিছু হয়েছে সবই বিধি মোতাবেক হয়েছে। দুর্নীতির অভিযাগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ছোট ছোট ঠিকাদাররা অনেক সময় কাজ পান না। এতেই তারা সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পিডব্লিউডি’র সিডিউল মোতাবেক বাজার অনুযায়ী দরপত্র আহবানের নিয়ম রয়েছে। ফলে কোন ঠিকাদার কোন দর দেবেন না দেবেন তা তার নিজস্ব বিষয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমি কাজের অনুমোদন দিতে পারি না। সুপারিশ করি, অনুমোদন দেন ঢাকার প্রকল্প পরিচালক’।