সতীর্থদের প্রতীক দিতে ভীত বিএনপি! ; করণীয় জানতে ইসিতে চিঠি

0
437

 

অনলাইন ডেস্ক : ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটে থাকা সতীর্থ দলগুলো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোট করতে চাওয়ায় নিজ দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিএনপি। শরীকদের প্রতীক দিতে গিয়ে চূড়ান্ত মনোনয়নের ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রার্থীদের যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য সবকিছু জেনেবুঝে এগুতে চায় দলটি। এক্ষেত্রে করণীয় জানতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে একটি আসনে একাধিক প্রার্থীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হলে পরে চূড়ান্তভাবে একক প্রার্থী কীভাবে নির্ধারণ হবে এবং জোটের প্রার্থীর প্রতীক কীভাবে নির্ধারিত হবে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর পাঠানো ওই চিঠি সোমবার ইসিতে পৌঁছে দেন বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি সরকার।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে জোটের মেরুকরণে নিবন্ধিত ৩৯ দলের প্রায় অর্ধেকই নিজেদের নির্বাচনী প্রতীক তুলে রেখে শামিল হয়েছে বড় শরিকের পতাকা তলে। অভিন্ন প্রতীকে নির্বাচন করতে চাইলে নির্বাচন কমিশনে তা জানানোর শেষ সময় ছিল গত বৃহস্পতিবার। তাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের ৮টি নিবন্ধিত দল ‘নৌকা’ প্রতীক এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের ১১টি দল ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছে। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩) (বি) ধারায় প্রাথমিক মনোনয়ন এবং ১৬(২) ধারায় চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়ে চিন্তায় পড়েছে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি।

মির্জা ফখরুলের চিঠিতে বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্রের ফরম-২ এ প্রাথমিক মনোনয়ন’ বলে কিছুর উল্লেখ নেই। এতে কিছুটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত মনোনয়ন কীভাবে দেয়া হবে তা স্পষ্ট করা দরকার। এক্ষেত্রে ২০ দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাদাভাবে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে কি না, একটি আসনে দল বা জোটের একাধিক প্রার্থী প্রাথমিক মনোনয়ন নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর জোটগতভাবে একজনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হলে অন্যদের প্রার্থিতাও বৈধ থেকে যাবে কি না, চূড়ান্ত মনোনয়নের পর জোটের প্রার্থীদের প্রতীক কীভাবে নির্ধারণ হবে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, কোনো আসনে একই দলের একাধিক প্রার্থী প্রাথমিক মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে দলীয় সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক/সম পদমর্যাদার একজন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরিত মনোনয়নের বিষয়ে প্রত্যয়ন থাকতে হবে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগে দল চূড়ান্ত মনোনীত একজনকে প্রত্যয়ন দেবে। সেক্ষেত্রে বাকিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যাহারের তালিকায় চলে যাবে। কিন্তু জোটভুক্ত অভিন্ন প্রতীক ব্যবহারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আসনে দুই দলের সম্মতিপত্র (যার প্রতীক ব্যবহার করবে এবং যে দল ব্যবহার করবে) রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগেই এ কাজটি করতে হবে। প্রত্যাহারের সময় শেষে নির্বাচন কমিশন প্রতীক বরাদ্দ করবে।

উল্লেখ্য, নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট একক প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু অনেক আসনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় প্রধান দুই দলকে বিভিন্ন কারণে ‘ঝামেলায়’ পড়তে হয়। ২০০৮ সালের ওই নির্বাচনে মহাজোটের আওয়ামী লীগ ২৬৪ আসনে, জাতীয় পার্টি ৪৯ আসনে, জাসদ ৭ আসনে, ওয়ার্কার্স পার্টি ৫ আসনে এবং চারদলীয় জোটের বিএনপি ২৬০ আসনে, জামায়াতে ইসলামী ৩৯ আসনে, বিজেপি দুই আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন ১৫১ জন। দলের মনোনয়ন না পেয়ে এদের অনেকে যেমন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন, তেমনি মতবিরোধের কারণে মহাজোট ও চারদলীয় জোট বেশ কিছু আসনে একক প্রার্থী দিতে পারেনি।