শোকে ভাসছে খুলনা : ভাইজানের জানাযায় লাখো জনতার ঢল

0
645

নিজস্ব প্রতিবেদক : শোকে ভাসছে খুলনাবাসী। ভাইজানের জানাযায় লাখো জনতার ঢল আজ ইতিহাস গড়লো। শোকেজর্জরিত খুলনাবাসীর ভাইজান পৃথিবী থেকে ছেড়ে চলে গেলো! শোকে কাতর মমানুষগুলো তাকে সাদরে বিদায় জানালো। দলমত উদ্ধে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছেন এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা তথা ভাইজান, সে চিত্রই প্রতিয়মান তার আজকের জানাযায় গণমানুষের ঢল।

 

 

খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার নামাজে জানাজা শহীদ হাদিস পার্কে ও টুটপাড়া কবরস্থানে মা-বাবারে পাশে দাফন সম্পন্ন হয় রবিবার।

জানাযায়, প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি ও শেখ সালাউদ্দীন জুয়েল, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্র অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল হক, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নবনির্বাচিত সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, মহানগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মী এবং হাজার হাজার সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

জানাযার আগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন। এছাড়া খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মহানগর ও জেলা বিএনপি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, জাতীয় পার্টি (জাপা), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা সিটি করপোরেশন, বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, কেএমপি, খুলনা প্রেসক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি, মহানগর ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা, বিএমএসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, ছাত্র ও পেশাজীবী সংগঠন মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করে।

এর আগে দুপুর সাড়ে ৩টায় মরহুমের মরদেহ নগরীর বাসভবন থেকে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আনা হয়। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মরদেহ বহনকারী গাড়ি পৌঁছালে নেতাকর্মীরা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এরপর একে একে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করা হয়।

এর আগে ঢাকায় জানাযা শেষে সুজার মরদেহ হেলিকপ্টার যোগে খুলনা নৌ বাহিনির তিতুমির হ্যালিপ্যাডে এসে পৌঁছালে দলের নেতা কর্মীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মরদেহের সঙ্গে ঢাকা থেকে প্রয়াত এমপি সুজার স্ত্রী খোদেজা রশিদি, ছেলে মেয়েরা, বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র সংসদ সদস্য শেখ হেলাল , তার ছেলে শেখ তন্ময়, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শিদী আসেন।

খুলনায় মরদেহ গ্রহন করেন খুলনার নবনির্বাচিত মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, মহানগর সাধারন সম্পাদক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান , খুলনা চেম্বারের সভাপতি কাজি আমিনুল হক প্রমুখ।

খুলনার টুটপাড়ার বাসভবনে মরহুমরে মরদেহ আনা হলে সেখানে আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাদ জোহর নগরীর টুটপাড়ায় মরহুম এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত মবকুল হোসেন জামে মসজিদে তৃতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসী অংশ নেন।

সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার দ্বিতীয় নামাজে জানাযা সম্পন্ন হয়। জানাজায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজসহ দলীয় নেতাকর্মী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী শরিক হন। এর আগে সিঙ্গাপুরে মরহুমের প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এস এম মোস্তফা রশিদী গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে দিবাগত রাত ১২.৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।