লকডাউন ঘোষণা না হলেও রাজশাহী শহরে ঢোকা-বের হওয়ায় কড়াকড়ি

0
440

খুলনাটাইমস: রাজশাহী শহরে ঢোকা-বের হওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে মহানগরীর প্রবেশমুখগুলোতে পুলিশ সদস্যরা এই কড়াকড়ি আরোপ করছেন। ফলে শহরের লোকজন বর্তমানে রাজশাহী থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হতে পারছে না বা বাইরের জেলা থেকে শহরে ঢুকতেও পারছেন না। তবে জেলায় এখনো ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিভাগের কমিশনার। গতকাল সোমবার সকাল থেকে রাজশাহীর বেলপুকুর, নওদাপাড়া আমচত্বর ও কাশিয়াডাঙ্গা প্রবেশমুখে গিয়ে দেখা গেছে- পুলিশ শহর থেকে প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে যেতে দিচ্ছে না। এ ছাড়া বাইরে থেকে শহরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। রাজশাহীর মূল শহরে প্রবেশের আগে কয়েকটি মোড়েও অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। সড়কে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। এভাবে মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া জনসমাগম ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য আজ থেকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আজ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত রাজশাহী শহর এলাকা থেকে কেউ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে পারবেন না, আবার বাইরের থেকেও কেউ শহরে ঢুকতে পারবে না। এ ছাড়া সন্ধ্যা ৬টা থেকে কেবল ওষুধের দোকান ছাড়া কোনো দোকানপাট খোলা রাখা যাবে না। এ ছাড়া জরুরি সেবা বাদে রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এদিকে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গতকাল সোমবার সকালে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করার জন্য কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বিভাগীয় সমন্বয় সভায় লকডাউনের প্রস্তাব করা হয়েছিল, তবে এখনই সেই সিদ্ধান্তে না যাওয়ার জন্য সবাই একমত হন। কিন্তু রাজশাহীর বাইরে যাওয়া ও প্রবেশের ওপর এবং যানবাহন চলাচল সংরক্ষিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, রাজশাহী বিভাগে এখনও করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে শনাক্ত হলে কীভাবে রোগটি মোকাবিলা করা যাবে সে বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। রাজশাহীতে জেনারেল হাসপাতাল নেই। তাই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, দুইটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং তিনটি স্টেডিয়ামকেই প্রস্তুত রাখার ব্যাপারে সবাই সহমত প্রকাশ করেছেন। এদিকে সভা শেষেই এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন- বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক, রাজশাহী রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক এ.কে.এম. হাফিজ আক্তার, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সুজাত ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপন্দ্রনাথ আচার্য্য, রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হকসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।