মোংলা বন্দরে আমদানি কমেছে এক চতুর্থাংশ

0
314

খুলনাটাইমস: দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর আমদানি-রফতানি ওপরেও প্রভাব ফেলেছে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি। এ অবস্থায় সরকারি নির্দেশনা ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম মেনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ কারণে এখানে গত বছরের মার্চের তুলনায় জাহাজ আগমন বেড়েছে। রফতানিও আগের মতো আছে। তবে আমদানি পণ্যের পরিমাণ গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২০-২৫ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। মোংলা বন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী নূর অ্যান্ড সন্স-এর এইচএম দুলাল বলেন, মোংলা বন্দর এলাকায় এখনও কেউ করোনায় আক্রান্ত না হলেও, রয়েছে আতঙ্ক। প্রত্যাশিত জাহাজ আসছে না। কয়লা, ক্লিংকার, গম, চাল, সার আমদানি না হওয়ায় নো-ওয়ার্ক নো-পে এর দুই হাজারেরও বেশি শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বন্দরে আমদানি কমে গেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে একশ’ একটি এবং মার্চে ৬৫টি জাহাজের আগমন ঘটে মোংলা বন্দরে। আর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাহাজ আসে ৭২টি এবং মার্চে আগমন বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩টিতে। মোংলা বন্দরে পণ্য আমদানির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ১০ লক্ষাধিক মেট্রিক টন, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মেট্রিক টন, ফেব্রুয়ারিতে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ মেট্রিক টন ও মার্চে সোয়া ১৩ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রায় সোয় ১২ লাখ মেট্রিক টন, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করা হয়। সেখানে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। রফতানির ক্ষেত্রে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ১১ হাজার মেট্রিক টন, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন, ফেব্রুয়ারিতে ১৩ সহস্রাধিক মেট্রিক টন ও মার্চে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মেট্রিক টন পণ্য রফতানি হয়। আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সোয়া ১৪ হাজার মেট্রিক টন ও ফেব্রুয়ারিতে সাড়ে ১১ হাজার মেট্রিক টন পণ্য রফতানি হয়। শিপিং এজেন্ট খুলনার ইউনিক মেরিটাইম এর পরিচালক বদিউজ্জামান টিটো বলেন, করোনার আগের এলসি করা পণ্য আসা এখনও চলছে। এ কারণে সামান্য কিছু জাহাজের আগমন হচ্ছে। এর ফলে মোংলা বন্দরে করোনা নিয়ে আতঙ্ক ছাড়া অন্য কিছুর ওপর তেমন একটা প্রভাব এখনও পড়েনি। তবে এপ্রিলের শেষে অথবা মে মাসের শুরুতে করোনার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন, ইটভাটা বন্ধ থাকলে কয়লা আমদানি করে বিক্রি করা যাবে না। আর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নৌবন্দরে শ্রমিক সংকট রয়েছে। আবার জাহাজ ও কার্গোতে স্টাফরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। করোনা ভাইরাসের কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল শেখ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকার ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম মেনেই মোংলা বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। করোনার প্রভাব বিশ্ব বাণিজ্যের ওপরই পড়েছে। এ অবস্থার মধ্যে মোংলা বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বন্দরে জাহাজ আগমন বেড়েছে। রফতানি সমান তালেই রয়েছে। তবে, আমদানি পণ্যের পরিমাণ কমেছে।