রোহিঙ্গাদের এনআইডি দিয়ে সোয়া কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে ২ মামলা

0
294

খুলনাটাইমস: জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীনসহ আটজনের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের ১ নম্বর ও ২ নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি দায়ের করা হয় হয় বলে ২ নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন জানিয়েছেন। এর মধ্যে দুদকের ২ নম্বর চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ৬৯ লাখ সাত হাজার ৪৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় শুধু জয়নালকে আসামি করা হয়েছে, যার বাদী শরীফ নিজে। অপরদিকে মোট ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা পাচারের অভিযোগে দুদকের ১ নম্বর চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপ-সহকারী পরিচালক জাফর সাদে শিবলীর করা মামলায় জয়নালসহ সবাইকে আসামি করা হয়েছে। অপর আসামিরা হলেন- জয়নালের স্ত্রী আনিছুন নাহার, জাফর, ঢাকায় এনআইডি প্রকল্পের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সত্য সুন্দর দে, জয়নালের সহযোগী সীমা দাশ, তার ভাই বিজয় দাশ, চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অস্থায়ী অফিস সহায়ক ঋষিকেশ দাশ, বান্দরবান সদর উপজেলার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিরুপম কান্তি নাথ। অর্থ পাচারের মামলার নথি অনুযায়ী, পরস্পর যোগসাজসে ইসলামি ব্যাংক চশবাজার শাখায় ৩৪ লাখ তিন হাজার ১৫২ টাকা, আল আরাফা ইসলামি ব্যাংক আনোয়ারা শাখায় ২৮ লাখ ২০ হাজার ১৪৪ টাকা, প্রাইম ব্যাংক বাঁশখালী এক লাখ ১০ হাজার এবং এসএ পরিবহনের মাধ্যমে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর বাড়ি নির্মাণে ব্যয়ের ঘটনায় আট আসামির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪(২) ও দ-বিধির ১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা হয়েছে। অন্যদিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬৯ লাখ সাত হাজার ৪৪২ টাকার সম্পদ নিজের ভোগ দখলে রাখার ঘটনায় জয়নালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা হয়েছে। গত অগাস্টে এক রোহিঙ্গা নারী ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে চট্টগ্রামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে গিয়ে ধরা পড়ার পর জালিয়াত চক্রের খোঁজে নামে নির্বাচন কমিশন। আটকে দেয় রোহিঙ্গা সন্দেহে অর্ধশত এনআইডি বিতরণ। এনআইডি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল, দুই সহযোগী সীমা ও বিজয়কে আটক ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করে পুলিশে দেন ইসি কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় করা মামলার তদন্ত করছে নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। ইতোমধ্যে কাউন্টার টেরোরিজম নির্বাচন অফিসের চারজন স্থায়ী ও প্রকল্পের অধীনে কর্মরত সাতজনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে নির্বাচন কর্মকর্তাদের অর্থিক দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে দুদক। চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন নির্বাচনী কর্মকর্তার সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠিও দিয়েছে।