রূপসার নৈহাটী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সীমাহীন দূর্নীতির অভিযোগ

0
459

রূপসা (খুলনা) প্রতিনিধি, খুলনাটাইমস:
রূপসার নৈহাটী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেহেনারা খাতুনের বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবর গত ৫ ফেব্রæয়ারী লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলার নৈহাটী গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত আইন উদ্দিন শেখের পুত্র বাদশা মিয়া।
অভিযোগে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক রেহেনারা খাতুন বিগত ২৮ বছরে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন আয়ের উৎস থেকে অতিরিক্ত টাকা ধার্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে তিনি সরকারী চলমান শিক্ষা নীতির নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোচিং, গাইড ও ভর্তি বানিজ্য অব্যাহত রেখে প্রতিষ্ঠানে একক আধিপত্য চালিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে নির্বাচন ছাড়াই নিজের মনোনিত ১ জন ব্যক্তিকে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বানিয়ে নিজের অপকর্ম অব্যাহত রেখেছেন। উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের জন্য ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে কাজ করার কথা থাকলেও স্বেচ্ছাচারি প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছামত কাজ সম্পাদন করেন। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী ১ হাজার টাকা নিজের কাছে রাখার বিধান থাকলেও বিদ্যালয়ের সমুদয় অর্থ নিজের কাছে রেখে ইচ্ছা, খুশি মত খরচ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আদৌ ব্যাংকে লেনদেন করা হয় না যাহা ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখলে প্রমানিত হবে। অপরদিকে তার ইচ্ছামত খরচকৃত অর্থ ভাউচার তৈরি করে সভাপতিকে উপঢৌকনের মাধ্যমে ম্যানেজ করে ভুয়া ভাউচারে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। জে এস সি ও এস এস সি পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে বোর্ড নির্ধারীত ফিস ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিভাবকরা তার কাছে গেলে তিনি তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করে থাকেন। সরকারী ভাবে গাইড নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন প্রকাশনীর প্রতিনিধির সাথে যোগসাজস করে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নির্দিষ্ট গাইড ক্রয় করানোর মাধ্যমে  লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তিনি এ বছরে প্রকাশনীর নিকট থেকে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা অর্থ বানিজ্য করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। যার মাত্র ৩০ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের মাঝে বন্টন করা হয়েছে বলে জানা যায়। তার এ সকল অপকর্মে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা করে থাকেন বিদ্যালয়ের চতুর সহকারী শিক্ষক উত্তম চ্যাটার্জী। এছাড়া বিদ্যালয়ে একজন দাতা বিগত দেড় বছর আগে ১৮ টি সিলিং ফ্যান প্রদান করলেও অদ্যাবধি তার সাদৃশ্য দেখা যায়নি। প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ে ২ টি টয়লেট থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ১ টি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। যে কারনে ছাত্রীদের অবর্ননীয় সমস্যায় পড়তে হয়। অথচ এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিংবা পরিচালনা পরিষদ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়না বলে জানা যায়। বিগত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরের শুরুতে ভর্তির জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হলেও তাদের কোন মানি রিসিট প্রদান করা হয়নি। অপরদিকে সম্প্রতি সরকারী জায়গা দখল করে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সচেতন মহল প্রধান শিক্ষক রেহেনারা খাতুনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক টি এম জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ঘটনা তদন্তের জন্য ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।#