টাইমস বিদেশ :
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সবশেষ জনমত জরিপ বলছে, হোয়াইট হাউসে যাওয়ার লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতেও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেট জো বাইডেন। বিশ্লেষকদের মতে, ৩ নভেম্বর নির্বাচনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঘায়েল হতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থতা : বিশ্বে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষ দেশ আমেরিকা। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর সংক্রমিত হয়েছে ৯০ লাখ। এখনো গড়ে প্রতিদিন ৮৯ হাজার মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছে। মার্কিন বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকায় এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ইস্যু- করোনাভাইরাস। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থতা এবং এ নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান শুধু আমেরিকা নয়, বরং বিশ্বজুড়েই বেশ সমালোচিত। বিবিসির জরিপ বলছে, প্রতি দশজনে সাত জন আমেরিকানই মনে করছেন করোনা ইস্যুতে জনগণের কাছে ভুল বার্তা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং বিশ্লেষক জো গার্সটেনসন বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করোনাভাইরাসের মোকাবেলা যা করছেন অধিকাংশ আমেরিকান তাতে খুশি নন।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ট্রাম্পের জনসভার কারণে অতিরিক্ত ৭০০ জন মারা গেছেন। কারণ, তার নির্বাচনী সভাগুলোয় স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না। সামাজিক দূরত্ব ছিল উপেক্ষিত। ট্যাক্স ফাঁকি : প্রেসিডেন্ট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন, আমেরিকানরা তা কোনোভাবেই মানতে পারছেন না। নির্বাচনে যা প্রভাব ফেলবে। চীনে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার বিষয়টিও তার জন্যে নেতিবাচক হয়েছে। গত নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে হিলারি ক্লিনটনের ইমেল কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়েছিল। যার সুবিধা পেয়েছিলেন ট্রাম্প। এবার তেমন কিছু নেই। উল্টো ট্রাম্পের নানা কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হচ্ছে। আগাম ভোটের রেকর্ড হচ্ছে, যা ট্রাম্পের বিপক্ষে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অর্থনৈতিক অবস্থান : যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিয়েছেন। তার নীতিতে বড় ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তীব্র আর্থিক সংকটে পড়েছে মানুষ। তাই আমেরিকার বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ এবারের নির্বাচনে ট্রাম্পের পরিবর্তে জো বাইডেনকে বেছে নিবে।
উদ্ভট মন্তব্য : করোনাসহ নানা ইস্যুতে উদ্ভট মন্তব্য করে বেশ সমালোচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। সবশেষ জনমত জরিপেও পিছিয়ে থাকা তা-ই প্রমাণ করে। গণমাধ্যম বিরোধী অবস্থান : প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, গণমাধ্যমগুলো যেসব খবর প্রচার করে তার বেশিরভাগই মিথ্যা ও বানোয়াট। ট্রাম্প তার সরকারের সমালোচনাকারী গণমাধ্যমগুলোকে মিথ্যা খবর প্রচারকারী হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রায় সময়ই টুইট বার্তায় তার কর্মকা-ের বিরুদ্ধে বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণের জন্য সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছর ফেব্রুয়ারিতে এক টুইটার বার্তায় লিখেছিলেন, নিউইয়র্ক টাইমস, এবিসি, সিএনএন শুধু আমার শত্রু নয় বরং এরা আমেরিকার জনগণের শত্রু। তবে আমেরিকার বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক ভবিষ্যৎবাণী করা যায় না। ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন যদি অল্প ভোটেও এগিয়ে থাকেন, তাহলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর আদালতে গেলে আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে ট্রাম্পের। তাই হোয়াইট হাউজে যেতে বড় ব্যবধানেই জিততে হবে জো বাইডেনকে।