যেভাবে নেবেন কানের যত্ন 

0
612

খুলনাটাইমস স্বাস্থ্য: শ্রবণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংবেদন ক্ষমতা, যার মাধ্যমে আমরা পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি। শ্রবণক্ষীণতা ও বধিরতা মানুষকে সমাজে অগ্রহণযোগ্য করে ফেলে। শিশুর ভাষা শিক্ষা, লেখাপড়া ও সামাজিক যোগাযোগের জন্য স্বাভাবিক শ্রবণশক্তি অপরিহার্য।
বধিরতার কারণে বিপুলসংখ্যক কর্মক্ষম মানুষ কর্মহীন জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি অর্থাৎ ৩৪.৬ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো মাত্রার শ্রবণ সমস্যায় ভুগছেন। ৯.৬ শতাংশ মানুষ প্রায় শ্রবণ প্রতিবন্ধী, তাদের দুই কানেই সমস্যা। ১.২ শতাংশ মানুষ তীব্র বধিরতায় এবং শতকরা ১.২ শতাংশ মানুষ মারাত্মক বা সম্পূর্ণ বধিরতায় আক্রান্ত। বধিরতা মূলত হয় জন্মগত বা পরবর্তীতে বিভিন্ন রোগ বা সমস্যার কারণে। এদের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হচ্ছে, মধ্যকর্ণের প্রদাহ, আঘাতজনিত সমস্যা, উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে সৃষ্ট বধিরতা, শব্দদূষণ যার মধ্যে রয়েছে- উচ্চমাত্রার শব্দে হেডফোন দিয়ে গান শোনা, উচ্চমাত্রার হর্ন বাজানো, লাউড স্পিকারের শব্দ, কল-কারখানার শব্দ ইত্যাদি। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তারা কানে ঠিকমতো শোনে কিনা? যদি শিশুদের শ্রবণজনিত সমস্যা অথবা কথা শিখতে দেরি হওয়ার মতো কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। আর বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে শ্রবণক্ষীণতা দেখা দিলে প্রয়োজনে অপারেশন করা, শ্রবণযন্ত্র অথবা উভয় পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা।

কানের যতেœ যা করণীয়
১. কানে কোনো কিছুই ঢোকানো যাবে না। এমনকি কান পরিষ্কার করার জন্য কাঠি, মুরগির পালক বা কটন বাড ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই।
২. খৈল জমে কান বন্ধভাব হলে বা কানের মধ্যে বাইরের কোনো বস্তু প্রবেশ করলে অপসারণ করতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
৩. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কানে তেল বা অন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
৪. কানে যাতে পানি না যায়, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
৫. আঘাতজনিত বা মধ্যকর্ণের প্রদাহ বা অন্য কারণে কানের সমস্যা মনে হলে অবহেলা না করে যত দ্রম্নত সম্ভব নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
৬. যত্রতত্র হর্ন বাজানো, লাউড স্পিকারে উচ্চশব্দ, হেডফোন ব্যবহার ও কল-কারখানার শব্দ সহনীয় মাত্রায় রাখতে হবে।
৭. শিশুদের টনসিল/এডেনইড/ সাইনাসের প্রদাহ এবং নাক ও গলার অ্যালার্জির চিকিৎসা করানো।
৮. শ্রবণমাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
আসলে বধিরতা সমস্যা-সমাধানে সবার আগে প্রয়োজন সচেতনতা। বর্তমানে জন্মগতভাবে বধির শিশু ও বড়দের শ্রবণজনিত সমস্যার অত্যাধুনিক চিকিৎসা দেশেও রয়েছে। তবে এসব জটিল চিকিৎসা ও অপারেশনের জন্য প্রয়োজন অত্যন্ত উচ্চমূল্যের যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবল। সুতরাং বধিরতা প্রতিরোধ ও নিরাময়ে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, শ্রবণযন্ত্র, ককলিয়ার ইমপস্ন্যান্টসহ অত্যাধুনিক চিকিৎসাসামগ্রী সহজলভ্য করে তোলা প্রয়োজন এবং সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে সচেতনতা।