মোশাররফের রায়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্ষোভ

0
281

খুলনাটাইমস বিদেশ : রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের বিস্তারিত রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। তাদের মতে, এ রায় সব ধরনের ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে গেছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।
দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক সেনাপ্রধানকে রাষ্ট্রদ্রোহিতায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মোশাররফকে সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর এ বিবৃতিতে বলেন, বিশেষ আদালতের দেওয়া এ রায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী অনেক দুঃখ ও ক্ষোভ নিয়ে গ্রহণ করেছে।
‘একজন সাবেক সেনাপ্রধান এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, যিনি ৪০ বছর দেশ রক্ষায় যুদ্ধ করেছেন, তিনি কখনোই রাষ্ট্রদ্রোহী হতে পারেন না। এ রায়ের মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছেন বিশেষ আদালত। ব্যক্তিগত অভিমত অনুসারে ও দ্রুততার সঙ্গে মামলা শেষ করা হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রত্যাশা করে, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের সংবিধান মেনে ন্যায়বিচার করা হবে।’
এদিকে, আইনমন্ত্রী ফারোগ নাসীম বলেন, এ রায় ‘নজিরবিহীন এবং জঘন্য’।
‘বিচারক হিসেবে অনুপযুক্ত’ এ ভিত্তিতে বিশেষ আদালতের বিচারক প্যানেল থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার শেঠকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। এছাড়া, এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হবে।
তিন সদস্য বিশিষ্ট এ বিশেষ আদালতে ছিলেন পেশোয়ার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার শেঠ, সিন্ধ হাইকোর্টের বিচারক নাজার আকবর এবং লাহোর হাইকোর্টের বিচারক শহীদ করিম। তাদের মধ্যে বিচারক নাজার আকবর মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করে রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া, বিচারক শহীদ করিম মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারে একমত হলেও মোশাররফের লাশ টেনে এনে ঝুলিয়ে রাখার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন।
এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার দুবাইয়ের এক হাসপাতালের বিছানা থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় মোশাররফ বলেন, ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসময় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন বলেও জানান মোশাররফ।
৭৪ বছর বয়সী মোশাররফ ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসন করেন। অসুস্থ হয়ে পড়ায় ২০১৬ সালের মার্চে চিকিৎসার জন্য দুবাই যান সাবেক এ সেনাপ্রধান। এখনো তিনি দুবাই রয়েছেন।