মহানগরীতে ত্রুটিযুক্ত ভবন নির্মাণের কারণে ফাটল ৪টি বাড়ি ও কেসিসি’র সড়কে : আশংকা দূর্ঘটনার

0
750

সুমন আহমেদ:
খুলনা মহানগরীর পশ্চিম বানিয়াখামার এলাকায় একটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজের ফলে চারপাশের ভবনগুলোতে ফাটল ধরেছে। সরেজমিনে বাড়ির সীমানা প্রাচীর, তিনটি বাড়ির ভিন্ন ভিন্ন স্থানসহ কেসিসি’র জব্বার সড়কে ফাটল দেখা গেছে। এঅবস্থায় এলাকাবাসী তীব্র আতঙ্কে ও উৎকন্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। যেকোন সময় অনকাংখিত দূর্ঘটনার ঘটে প্রাণহানির আশংকা করছে তারা।
এনিয়ে স্ব স্ব বাড়ির মালিকেরা খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)’র চেয়ারম্যান ও সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে থানা পুলিশ ও কেডিএ প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। তবুও প্লটের মালিক কোন কথা শুনতে চান না, উল্টো হুংকার তোলেন কেডিএ বা কেউ তার কাজ বন্ধ করতে পারবে না, অভিযোগ ভূক্তভোগীরা জানান। তাদের দাবি, নিরাপদ উপায় অবলম্বন করে ভবনটি নির্মাণের সাথে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক।

এনিয়ে কেডিএ’র অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী শামীম জিহাদ খুলনাটাইমসকে বলেন, ভূক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বর্তমানে ওই বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ভূক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ পাবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি চেয়ারম্যানের সাথে কথা না বলে, কিছু বলা যাবে না বলে জানানা।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র শিক্ষক স্থপতি মো: শামছুদ্দোহা খুলনাটাইমসকে বলেন, সাধারণ জনবসতি এলাকায় স্যান্ড পাইলিং করা ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষ পুরানো বাড়িগুলোর জন্য। এজন্য আমরা এসব এলাকায় সিটু পাইলিং’র পরামর্শ দেই। তিনি বলেন, ওইখানে স্যান্ড পাইলিং করায় চারপাশের ভবনগুলোর বেশ ক্ষতিসাধণ হয়েছে, যা অপূরণীয়।
কেসিসি ২৬নং ওয়ার্ডস্থ পশ্চিম বানিয়াখামার মেইন রোডের ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন, ৫৩ নং হোল্ডিং বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্, ৫৩/১ নং হোল্ডিং বাড়ির মালিক মো: মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, ৫৩/৪ নং হোল্ডিং বাড়ির মালিক মো: আব্দুর রহমান ও ৫৩/ ১৪নং হোল্ডিং বাড়ির মালিক ডা: মো: আক্তারুজ্জামান।
লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, তাদের পার্শ্ববর্তী একটি প্লটের মালিক মো: আব্দুল খালেক গত ৭মার্চ বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য স্যান্ড পাইলিং শুরু করেন। এতে চারপাশে অবস্থিত তাদের বাড়িগুলোতে ভূমিকম্পের মতো তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। ওইদিনই প্রাথমিক একটি অভিযোগ কেডিএ’র চেয়ারম্যানের কাছে দেয়া হয়। এস্বত্তে¡ও কোনরূপ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এঅবস্থায় বাড়িগুলোর বিভিন্ন স্থানে ও সীমানা প্রাচীরে ফাটল ধরেছে, একটি বাড়ি একদিকে দেবে গেছে, এমনকি পূর্ব পাশের আব্দুল জব্বার সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। যার কারণে বাড়ির বাসিন্দাসহ এলাকাবাসী তীব্র আতঙ্কে ও উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে। যেকোন সময় অনকাংখিত দূর্ঘটনার ঘটে অপূরণীয় ক্ষতিসাধনসহ প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। ইতোমধ্যে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন বাড়ির সামনের সড়কে এক তৃতীয়াংশ দখল রেখে বালু ও খোয়া রাখা, ভেতরে স্যান্ড পাইলিং করার যন্ত্রাংশ। ডানপাশের বাড়িটি সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার। তার বাড়ির দেয়াল একাধীক স্থানে ফাটলের সাথে হেলে পড়েছে। ভেতরে বেশকটি স্থানে ফাটলতো আছেই, টাইলস খুলে পড়েছে। পেছনের বাড়িটি বেশ পুরানো হওয়ায় এমনিতেই নড়বড়ে। সাথে ফাটল যুক্ত হওয়ায় ঝুঁকি আরও বেড়েছে। একই চিত্র অন্য দুটির বাড়িরও। কেসিসি’র সড়ক জব্বার স্মরণীতে ফাটল পরিলক্ষিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওই প্লটের মালিক আব্দুল খালেকের মুঠোফোনে (০১৭০৭-০০৬৩৫৩) যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।#