বাধার মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

0
348

খুলনাটাইমস আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইইউ সম্মেলনে নতুন ব্রেক্সিট চুক্তির প্রতি সমর্থন আদায় করতে পারলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন সংসদে প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে পারেন। বিরোধীদের সঙ্গে আপোশ সম্ভব না হলে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। গত বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দু-দুটি সাফল্যের স্বাদ পেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। প্রথমে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে বোঝাপড়া চূড়ান্ত হলো। তারপর ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা একযোগে সেই চুক্তির প্রতি সমর্থন জানালেন। দুই পক্ষের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বিষয়ে রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রও অনুমোদন করেন তাঁরা। জনসন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অংশ না নিয়ে দেশে ফিরে সংসদে তাঁর ‘নতুন’ ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সমর্থন আদায় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে সেই কাজ যে মোটেই সহজ হবে না, গত বৃহস্পতিবারই তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। এই ‘নতুন’ ব্রেক্সিট চুক্তির রূপরেখা স্পষ্ট হলেও এর অনেক খুঁটিনাটী বিষয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহল। নতুন চুক্তি অনুযায়ী আইরিশ সীমান্তে ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ পড়লেও তার বদলে অত্যন্ত জটিল এক ব্যবস্থা চালু হবে। বরিস জনসনের দাবি মেনে উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশকে যুক্তরাজ্যের শুল্ক কাঠামোয় রাখা হলেও সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু নিয়মকানুন বজায় থাকবে। বিশেষ করে সেখানে পণ্যের আগমন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যে পণ্য শেষ পর্যন্ত ইইউ-তে প্রবেশ করবে,তার উপর শুল্ক বসানো হবে। ভ্যাট সংক্রান্ত জটিলতাও দূর করা হয়েছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের আঞ্চলিক পার্লামেন্ট প্রতি চার বছর অন্তর এই নিয়ম চালু রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। গতকাল শুক্র ও আজ শনিবার বরিস জনসনকে নিজের টোরি দল, জোটসঙ্গী উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডিইউপি দল এবং সংসদে বিরোধী পক্ষের কাছ থেকে এই চুক্তির প্রতি সমর্থনের চেষ্টা চালাতে হবে। তিনি এখনো ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে আজ শনিবারই সংসদে এই চুক্তি অনুমোদন করাতে চান তিনি। কিন্তু সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় এবং দলের মধ্যে আবার বিদ্রোহের আশঙ্কার ফলে তাঁকে বিরোধী ও বিদ্রোহী পক্ষের সমর্থনের প্রয়োজন হবে। এখনো পর্যন্ত জোটসঙ্গী ডিইউপি, বিরোধী লেবার পার্টি ও উদারপন্থি দল এই চুক্তির বিরোধিতা করছে। বরিস জনসন সংসদে যথেষ্ট সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হলে আবার নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে। সংসদের বিতর্কে আগাম নির্বাচন বা গণভোটের দাবি যুক্ত হলে ব্রেক্সিটে বিলম্ব বা ব্রেক্সিট বাতিল হয়ে যাবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই চুক্তির আরেকটি দিকও ব্রিটেনের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। পূর্বসূরি টেরেসা মে-র প্রথম ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়ায় ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে নিবিড় সম্পর্কের উল্লেখ ছিল। জনসনের চুক্তি কার্যকর হলে দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্যের পথে অনেক বেশি বাধা থাকবে। ফলে ব্রিটিশ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি থমকে যাবে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।