প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পুলিশের ২০ কোটি টাকা অনুদান

0
273

খুলনাটাইমস: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ‘লকডাউন’ অবস্থায় কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্রদের সহায়তায় বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গত রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসের কাছে এই অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সরাসরি যোগ দেন বলে পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। অনুদানের মধ্যে রয়েছে পুলিশ কনস্টেবল থেকে আইজি পর্যন্ত কর্মকর্তা ও সদস্যদের একদিনের বেতন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, পুলিশ অফিসার্স মেস ও পুলিশ কল্যাণ তহবিলের অর্থ। চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশন্স) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এসবির অতিরিক্ত আইজি মীর শহীদুল ইসলাম, ডিএমপি কমিশনার ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদুল আলম এবং বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ১০ লাখ টাকা অনুদান: করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ তহবিলে ১০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে গত ৫ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ১০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। এদিকে করোনা সংক্রামণ মোকাবিলা এবং বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগসহ দেশের সব নিম্ন আদালতের ছুটি আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
১০ কোটি টাকা দিল যমুনা গ্রুপ: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দশ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে যমুনা গ্রুপ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের চলমান পদক্ষেপগুলোকে আরও বেগবান করতে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দেশের অন্যতম বৃহৎ এই শিল্প প্রতিষ্ঠানের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ব্যক্তির শরীরে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। মারাও গেছেন বেশ কয়েকজন। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগে অংশ নিতে আর্তমানবতার সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে এসেছে যমুনা গ্রুপ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যমুনা গ্রুপের পক্ষ থেকে সরকারের উদ্যোগে সাথে থাকার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকা অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। গত রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম অনুদানের এ চেক হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলামসহ অন্যান্য পরিচালকউপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন। অনুদানের চেক প্রদানের পর যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন। এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী যমুনা গ্রুপের নিজস্ব কারখানায় প্রস্তুত ৭৫ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুমুক্ত করে বারবার ব্যবহারযোগ্য ১৩ হাজার পিপিই এবং ৭৫ হাজার সার্জিক্যাল ও এন ৯৫ ফেস মাস্ক এবং ২ হাজার পিস সিই মার্কিন সার্টিফিকেট সম্পন্ন করোনা শনাক্তের কিট চিকিৎসা সামগ্রী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নিকট পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, নিজ দেশের মানুষের জন্য কিছু করার অনুভূতি থেকেই সরকারের সব উদ্যোগে সাথে থাকবে যমুনা গ্রুপ। আমাদের সকলেরই নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী এই লক্ষ্যে কাজ করে জনগণের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
মেঘনা গ্রুপের ৫ কোটি টাকা: করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে মেঘনা গ্রুপ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের চলমান পদক্ষেপগুলোকে আরও বেগবান করতে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দেশের অন্যতম বৃহৎ এই শিল্প প্রতিষ্ঠানের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দুর্যোগ মোকাবিলায় মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই) প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। গত রোববার এই অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতীতের যে কোন দুর্যোগের মতোই এবারের এই বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলাতেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে মেঘনা গ্রুপ। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর, টাঙ্গাইল, যশোর, খুলনা ও শরিয়তপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক, ইউএনও এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ২৫ হাজার প্যাক (প্রতি প্যাকে রয়েছে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আটা, ১ লিটার তেল, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি লবন) ভোগ্যপণ্য বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
২ কোটি টাকা দিয়েছে রূপায়ণ গ্রুপ: করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দুই কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে রূপায়ণ গ্রুপ। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের চলমান পদক্ষেপগুলোকে আরও বেগবান করতে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের কাছে অনুদানের চেক তুলে দেন রূপায়ণ গ্রূপের ভাইস চেয়ারম্যান আলী আকবর খাঁন রতন এবং গ্রুপের আরেক ভাইস চেয়ারম্যান ও দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রকাশক এবং এশিয়ান টিভির পরিচালক মাহির আলী খাঁন রাতুল। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে রূপায়ণ গ্রুপের পক্ষ থেকে কথা বলেন মাহির আলী খাঁন রাতুল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান এল এ মুকুল আগেও দেশের ক্রান্তিলগ্নে মানুষের জন্য কাজ করেছেন। বর্তমানে এবং ভবিষ্যতেও দেশের যে কোন প্রয়োজনে কাজ করতে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তার এমন বার্তা ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন মাহির আলী খাঁন।
পিএইচপির ২ কোটি টাকা হস্তান্তর: নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দুই কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে দেশের অন্যতম শিল্পগ্রুপ পিএইচপি ফ্যামিলি। পিএইচপি পরিবারের চেয়ারম্যান সুফি মোহম্মদ মিজানুর রহমানের প্রতিশ্রুতি মতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের চলমান পদক্ষেপগুলোকে আরও বেগবান করতে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চেক হস্তান্তর করেন পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস চেক গ্রহণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন। এর আগে গত ১ এপ্রিল চিকিৎসকদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) দেয় পিএইচপি ফ্যামিলি। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এসব পিপিই দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া ১০ হাজার অসহায় পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে পিএইচপির পক্ষ থেকে। সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় এ বছর পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান একুশে পদকের সঙ্গে পাওয়া টাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যয়ের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালকের হাতে দিয়েছেন। এছাড়া অনুদান দেওয়া সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: রেলপথ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), কোস্ট গার্ড, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, অগ্রণী ব্যাংক, সরকারি ব্যাংকসমূহ, কারা অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), সরকারি তিতুমীর কলেজ। বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মেঘনা গ্রুপ, ইউনাইটেড গ্রুপ, মোমেন গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, রূপায়ন গ্রুপ, কেআইবি, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড, মিডল্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড, ওউঈঙখ চঙ ঋড়ৎঁস খঃফ., ড্রিম হলিডে পার্ক নরসিংদী, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, মাধবদী ডাইং লিমিটেড, কঈঔ ধহফ অংংড়পরধঃবং খঃফ., ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ট্রাকো, ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, সৎসঙ্গ বাংলাদেশ, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন অব বাংলাদেশ, বায়রা, বেসিক বিল্ডার্স লিমিটেড, এএম গ্রুপ, ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল, বিজিএমইএ, ফ্রেস গ্রুপ, বিকেএমইএ, সিটি গ্রুপ ও এফবিসিসিআই প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অনুদান দেয়।