পেঁয়াজের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে: ওবায়দুল কাদের

0
292

খুলনাটাইমস: সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের বাজারের এ অবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া যাদের কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। শিগগিরই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। কারণ, বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসছে, এমনটাই দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, পেঁয়াজ, চাল, ধানসহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলেই পরে তা আবার স্বাভাবিক হয়ে আসে। পেঁয়াজের সিন্ডিকেট চিহ্নিত হলে অবশ্যই সাজা পাবে তারা। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তো আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়। তারা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চায় না। বিএনপি নেতারা নিজেরাই বারবার বলছেন, তাঁরা দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করে আনতে চান। আমরা তাঁদের দুর্বার আন্দোলন দেখার অপেক্ষায় আছি। ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের আসন্ন সম্মেলনে বিএনপিকে নিমন্ত্রণ করা হবে। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানোর পাশাপাশি কূটনীতিকদেরও দাওয়াত দেওয়া হবে। যেহেতু মজিববর্ষে বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, তাই এবারের সম্মেলনে কোনও বিদেশি মেহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে দলে পদ নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জয়ের ইচ্ছার ব্যাপারও আছে এবং নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) কোনও কিছু বললে তিনি বলেন, ‘জয় তো আসতে চায় না। এখনও তার আসার আগ্রহ নেই।’ এই বিষয়টা আমাদের পার্টির সভাপতি, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বিষয়। জয়ের নিজেরও ইচ্ছার ব্যাপার। আমি বার বার নেত্রীকে বলে আসছি, জয়কে পরবর্তীকালের জন্য গ্রুমিং করার বিষয়টা। জয় যেভাবে আছেন সেভাবেই তিনি আপাতত থাকতে চান। পীরগঞ্জে তাকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য অনেক দাবি ছিল, কিন্তু তিনি রাজি হননি। কাজেই জয়ের নিজের ইচ্ছারও এখানে ব্যাপার আছে। জয় যখন বাংলাদেশে আসবেন, আপনারা তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। দলে শেখ হাসিনা ছাড়া আরও কেউ অপরিহার্য ব্যক্তি নয় বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক পদেও নেত্রী যা ইচ্ছে করবেন, সেটাই হবে। তিনি পরিবর্তন চাইলে পরিবর্তন হবে। আমাদের এখানে কোনও প্রতিযোগিতা নেই। হয়তো কারও কারও ইচ্ছে ও আকাক্সক্ষা থাকতে পারে। সাধারণ সম্পাদক পদেও প্রার্থী থাকতে পারে। সেখানে কোনও অসুবিধা নেই। আমি যদি মনে করি, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ হতে পারবে নাÑ এটা তো ঠিক না। এটা ডিসাইট করবেন নেত্রী। তবে প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবার আছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের কমিটির কলেবর এখন পর্যন্ত বাড়ানোর চিন্তাভাবনা নেই। কমিটি ৮১ জনই থাকবে। বর্তমান কমিটিতেই একটি সদস্য পদ ও সভাপতিম-লীর দুটি সদস্যের পদ খালি আছে। সেগুলো এই মুহূর্তে পূরণ হবে না। সম্মেলনের মধ্যদিয়েই আমরা পুরো কমিটি করে ফেলবো, এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। ওবায়দুল কাদের জানান, দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন কোনও এমপি দলের উপজেলা পর্যায়ে পদপ্রার্থী হতে পারবেন না। এটা আমরা নিরুৎসাহিত করছি। উপজেলা পর্যায়ে সংসদ সদস্যদের আমরা অনুরোধ করছিÑ তারা যেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে না এসে ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের একটা সুযোগ করে দেন। কারণ, তাদেরও অধিকার আছে। তারা এমপিও হতে পারেনি, দলে নেতৃত্বও পাবেন না, এটা তো হয় না। দলের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন কাউন্সিল অধিবেশন হবে। যদি ঘোষণা পত্র ও গঠনতন্ত্রে কোনও সংশোধনী থাকে, সেটার অনুমোদন নেওয়া হবে। ঘোষণা পত্র ও গঠনতন্ত্রে সংশোধনীর ব্যাপারে এরমধ্যেই আমরা জেলা শাখাগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছি। তাদের কোনও প্রস্তাব আছে কিনা, সংযোজন, সংশোধন অথবা পরিমার্জন পরিবর্ধনে জেলা শাখার কোনও প্রস্তাব আছে কিনা, সে ব্যাপারে তাদেরকে আমরা চিঠি পাঠাতে বলেছি। তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বর্তমান মঞ্চে জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। নৌকার আদলে মঞ্চ হচ্ছে। সম্মেলন জাঁকজমক পূর্ণ হবে না। তবে মুজিববর্ষ জাঁকজমকপূর্ণ হবে। বর্ণিল না হলেও সমাগম বেশি হবে। সম্মেলনে দেশের প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে চেয়ার ছোড়াছুড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ উত্তরের সম্মেলনে তরুণদের মধ্যে বচসাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা হলেও তা বড় কিছু নয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল উপস্থিত ছিলেন।