খুলনাটাইমস: বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে শিল্পমন্ত্রী যেদিন বললেন ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে’, তার পরদিনই এক লাফে পেঁয়াজের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে যায়। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর পেঁয়াজের দাম আরো বেড়ে গেছে। তাঁদের বক্তব্য সিন্ডিকেটকে উসকে দিচ্ছে। রিজভী আরো বলেন, পেঁয়াজ গতকাল ছিল ২০০ টাকা। আজ হবে আড়াইশ টাকা, আগামীকাল ৩০০ টাকা। এটা ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তার পর জনগণকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে আরেকটা হয়তো কিছু করতে পারে। গতকাল শুক্রবার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি এবং পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে এ কথা বলেন রিজভী। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের উদ্যোগে মিছিলটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রুহুল কবির রিজভী। মিছিল শেষে রুহুল কবির রিজভী বলেন, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের কেজি দেড় শতকের পর ডাবল সেঞ্চুরি পেরিয়ে গেছে। গতকাল যোগ হয়েছে আরো ৪০ টাকা। ২৪০ টাকা ছাড়িয়েও থামেনি দাম। আর কত দাম বাড়বে, এ নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। রিজভী আরো বলেন, পেঁয়াজের সিন্ডিকেট কারা? ওরা তো আওয়ামী লীগের লোক, ক্ষমতাসীন দলের লোক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনার অভিযান সিন্ডিকেটের দিকে ধাবিত হয় না কেন? কারণ, ওরা আপনার চেয়েও ক্ষমতাশালী। ওদের গায়ে আপনি হাত দিতে পারবেন না। বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পেঁয়াজ দেশে আছে, তা চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। তাহলে এভাবে লাগামহীনভাবে দাম বাড়ছে কেন? রাজধানীর খুচরা বাজারে, পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ২৪০ টাকা ছাড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ মনে করে, পেঁয়াজ নিয়ে যে সিন্ডিকেট লুটতরাজ করছে, তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি সরাসরি জড়িত। এ কারণে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ না নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলছে। অবিলম্বে আমরা ব্যর্থ মন্ত্রীদের পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। বিএনপির চেয়ারপারসনকে কোনো প্রকার চিকিৎসাই দেওয়া হচ্ছে না। গত আট দিন তাঁর কাছে কোনো চিকিৎসক যাননি। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর উন্নত চিকিৎসা না দিলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, আমরা মনে করি, এই মিডনাইট সরকার গভীর নীলনকশা অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার অপপ্রয়াসে চাহিদামতো চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে না। তাঁর প্রাপ্য জামিনে সরাসরি বাধা দেওয়া হচ্ছে। নগ্নভাবে আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। সুচিকিৎসার অভাবে তাঁর জীবন এখন সংকটাপন্ন। আমি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি।