পুকুর খনন করায় হুমকিতে দাকোপের শ্রীপুর এ্যাগ্রো লিমিটেড

0
846
All-focus

নিজস্ব প্রতিবেদক :
খুলনার দাকোপ উপজেলার খোনা গ্রামের শ্রীপুর এ্যাগ্রো লিমিটেডের পাশে গভীর পুকুর খনন করায় ওই মৎস্য খামারের পাড় ধসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ওই খামারের পাশে পুকুর খনন করে বাগদা চাষের হ্যাচারি নির্মাণ করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন। এতে হুমকির মুখে রয়েছে শ্রীপুর এ্যাগ্রো লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি।

শ্রীপুর এ্যাগ্রো লিমিটেডের পরিচালক রাশেদ কামাল অভিযোগ করে খুলনাটাইমসকে বলেন, লবণ পানি মুক্ত করে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই মৎস্য খামারটি চালিয়ে আসছি। খামারের মধ্যে মনোরম পরিবেশ তৈরি করতে সাদা মাছের পাশাপাশি ফলদবৃক্ষ রয়েছে। এখন খামারের বেড়িবাঁধের পাশ দিয়ে গভীরভাবে পুকুর ও খাল খনন করছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। ফলে খামারের পাড় বড় ধরনের ধস নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাড় ধসে খামারের ভিতরে লবণ পানি প্রবেশ করে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ফলদবৃক্ষসহ খামারের পরিবেশ নষ্ট হবে। এভাবে খনন করায় কালচারের পাড় ধসসহ কয়েক কোটি টাকার মূল্যবান সম্পদ হুমকির মুখে। শুধু তাই নয় লবণ পানির ওই বাগদা চাষের হ্যাচারির কারণে এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ১২০ বিঘা জমির ওপরে শ্রীপুর এ্যাগ্রো লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি। ওই খামারের পাশে স্কেভেটর মেশিন দিয়ে কালচারের পাশে গভীরভাবে খনন করতে। খননের পাশাপাশি পাড়ের ধসও চোখে পড়ে।

খননের পাশ থেকে খড় (ধানের নাড়া) নিয়ে যাচ্ছিলেন খোনা গ্রামের বাসিন্দা দীনবন্ধু মণ্ডল (৭০)। তিনি সংবাদকর্মীদের দেখে ছুটে এসে বলেন এখানে আর বসবাস করার মত পরিবেশ নেই। তাই তিনি ভারতে যাওয়ার কথাও ব্যক্ত করেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, একেবারই ওয়াপদার রাস্তা হতে খোনা গ্রামের মোল্লা বাড়ি পর্যন্ত বাগদা চাষের জন্য হ্যাচারি নির্মাণ করে চলছে চেয়ারম্যান। বাকি ছিল কামাল সাহেবের খামারের পাশে অন্য একজনের একখণ্ড জমি সেটাও নাকি এখন আমলে নিয়ে হ্যাচারি নির্মাণ করছে চেয়ারম্যান। এটুকু জায়গায় আমরা ধান লাগাতাম এবং গরু পালতাম সেটা এখন আর হবে না। খাদ্য না পাওয়ায় বাড়িতে আর গরু ছাগল রাখতে পারবো না।

উপজেলার খোনা গ্রামের মিনতী রায় খুলনাটাইমসকে বলেন, কামাল ও আবুল সাহেবের কালচারের মাঝখানের জমিতে ধান চাষ হতো। ওই জমির ধানের খড় নিয়ে গবাদিপশুর খাওয়ানো যেত। কিন্তু সেটা এখন আর হবে না। আবুল সাহেব জায়গাটিতে বাগদার হ্যাচারির করছে। তিনি আরও বলেন, বাগদার হ্যাচারির কারণে পাশে কামাল সাহেবের মিষ্টি পানির মাছের খামারটির ক্ষতি হবে। তখনি একই কথা বলেন শান্তি মণ্ডল। শান্তি মণ্ডল বলেন, খামারের পাশ দিয়ে যেভাবে গভীরভাবে খনন করছে তাতে শ্রীপুর এ্যাগ্রো লিমিটেডের পাড় ধসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ফলে ওই প্রতিষ্ঠানটি হুমকির মুখে পড়বে।

এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যানের বাগদার হ্যাচারির জন্য তাদের চারপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শুধু এটা নয় লবণ পানির হ্যাচারির বিষ্ঠাপানি খেয়ে মারা যাচ্ছে হাঁস মুরগি। লবণ পানির প্রভাবে বিস্তীর্ণ এলাকার গাছগাছালি নষ্ট হচ্ছে।

এ বিষয়ে দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমি ওই অঞ্চালে চিংড়ী চাষ করে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছি। এখন পুকুর খনন করে আরও উন্নতভাবে হ্যাচারি তৈরি করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন বাগদা চাষের জন্য নদী থেকে হ্যাচারির মধ্যে লবণ পানি উত্তোলন করা হয়। আমি আমার জায়গায় পুকুর খনন করে হ্যাচারি নির্মাণ করছি। তিনি আরও বলেন, আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য মহলটি এসব অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।