পলি জমে মৃত্যু প্রায় পাইকগাছার শিবসা নদী : দখলে ভূমিদস্যুরা

0
427

অমল কৃষ্ণ মন্ডল, পাইকগাছা (খুলনা): পাইকগাছায় পৌরসভার কোল ঘেষে প্রবাহিত শিবসা নদীটি পলি জমে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌছিয়েছে। পানি নিস্কাশনের কোন উপায় নাই। সামান্য জলোচ্ছাস বা জোয়ারের পানি বাড়লেই তলিয়ে যায় পৌর সদর। নদীটি খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
খুলনা জেলার প্রথম পৌরসভা পাইকগাছা পৌরসভাটি শিবসা নদীর উপকূলে অবস্থিত। যার ৩ দিকে রয়েছে শিবসা নদী আর ১দিকে স্থলভাগ। মাত্র কয়েক বছর পূর্বে নদী দিয়ে লঞ্চ, স্টীমারে করে দক্ষিণ এলাকার লোকজন খুলনা জেলা সদরে যাতায়াত করত। পাইকগাছা বাজারের পাশেই ছিল যাত্রী ছাউনী বিআইডব্লিউটিএ ঘাট। প্রতিদিন কয়েকটি লঞ্চ ভিড়ত উক্ত ঘাটে। লোকজন উঠা-নামা সহ ব্যবসায়িক মালপত্র উঠানামা করত। পৌরসভার ৩ দিকে ছিল ৩টি খেয়াঘাট। হাজার হাজার যাত্রী পারাপার হতো খেয়া নৌকায়। কিন্তু কালের বিবর্তনে নদীটি পলি জমে একেবারেই ভরাট হতে চলেছে। বর্তমানে লঞ্চ, স্টীমার দুরের কথা নৌকা চলতে দুরহ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। নদীর তলদেশের তুলনায় পৌর সদর ও নদীর দক্ষিণ পাশের সোলাদানা ও লস্কর ইউনিয়নের স্থল ভূমি অনেক নিচু হয়ে গেছে। ফলে পৌর সদর সহ এলাকার পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা হারিয়ে ফেলেছে। নদীতে সামান্য জলোচ্ছাস বা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হলে বাজার তলিয়ে যায়। আর বৃষ্টি হলে তো কথায় নেই। পৌর সদরসহ আশ-পাশের এলাকা অধিকাংশ সময় তলিয়ে থাকে। নদীতে পলি জমে দু’ধারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জন্মে বনাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে শিববাটী ব্রীজ হতে পৌর সদরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শিবসা নদী হাঁড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পলি জমে চরাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। নেই কোন খেয়াঘাট, লোকজন হেটেই নদী পার হচ্ছে। এমনিভাবে চলতে থাকলে ২/৩ বছরের মধ্যে পাইকগাছা পৌর সদরসহ আশপাশ এলাকা বছরের পর বছর তলিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠির এই এলাকার নদীটি খনন করে পূর্বের ধারায় ফিরিয়ে নিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে পাইকগাছা পাউবো উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন জানান, পাইকগাছার শিববাটি ব্রীজ হতে হাঁড়িয়া পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার খননের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এখনও একনেকে প্রস্তাবনাটি উঠেনি। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যত দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই নদী খননের আবেদনটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একনেকে পাশ করে নদী খননের কার্যক্রম দ্রুত করা সম্ভব হয়। এদিকে, নদীটি পলি জমে ভরাট হওয়ায় এক শ্রেণীর ভূমিদস্যুরা একেরপর এক নদীটি দখল করে নিচ্ছে। অপরদিকে, নদীটি খনন পূর্বক বৃহত্তর জনগোষ্ঠির এই এলাকা রক্ষা করার জন্য আঞ্চলিক পানি কমিটি সহ বিভিন্ন সংস্থা মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে চলেছে।