নেপালে বিমান দূর্ঘটনায় তিন দক্ষ কর্মী হারাল রানার অটোমোবাইলস

0
952

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:

নেপালের রমন মোটর্সকে প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে তিন কর্মকর্তা নিহত হয়েছে বাংলাদেশের রানার অটোমোবাইলস কোম্পানির। এতে তিন দক্ষ কর্মী হারাল প্রতিষ্ঠানটি।

গত বছরের ২১ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল নেপালে রপ্তানির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। দেশটির প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাংলাদেশের নিজস্ব এ ব্র্যান্ডটি জায়গা করে নেওয়া ছিল খুবই চ্যালেঞ্জের। আর দেশটিতে রানারের মোটরসাইকেল ভালোই সাড়া পাচ্ছিল। সেখানে রানার অটোমোবাইলসের ডিস্ট্রিবিউটর রমন মোটর্স রানারের বিক্রয় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে কাজ করছে। নেপালে রমন মোটরর্সের কর্মীদের বিক্রয়োত্তর সেবার প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের দূর্ঘটনায় সোমবার নিহত হয়েছেন রানার অটোমোবাইলসের হেড অফ সার্ভিস এস এম মাহমুদুর রহমানসহ আরো দুজন দক্ষ কর্মী।

এই তিন কর্মী হারিয়ে রানার পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত তিন কর্মী হলেন রানার অটোমোবাইলসের হেড অফ সার্ভিস ও সিনিয়র ম্যানেজার (কাস্টমার কেয়ার) এস এম মাহমুদুর রহমান, এসিসটেন্ট ম্যানেজার মো: মতিউর রহমান, জুনিয়র অ্যাসিটেন্ট ফোরম্যান নুরুজ্জামান বাবু। এই তিন কর্মী যথাক্রমে ফরিদপুর, ফেনী ও পাবনার সন্তান। তাদের ১৭ মার্চ ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটেই দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হলে রানারের এই তিন কর্মী প্রান হারান। তাদের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে স্বজনসহ রানারের ২ জন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ইতিমধ্যেই নেপালে গিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় আমরা অত্যান্ত শোকাহত এবং আমাদের তিন সহকর্মীর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই। তারা রানার অটোমোবাইলসের অত্যান্ত দক্ষ কর্মী ছিলেন। বিশেষ করে বিক্রয়ত্তর সেবার ক্ষেত্রে তারা রানার গ্রæপের সম্পদে পরিনত হয়েছিলেন। একজনতো রানারের শুরু থেকেই আছেন। এই দর্ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত। এই ক্ষতি অপূরনীয়। আমাদের কম্পানীর তরফ থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর নেপালের বাজারে নতুনভাবে মোটরসাইকেল রপ্তানি শুরু করে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস স্মরনীয় করে রাখতে আরো বর্ধিত পরিসরে নেপালে মোটরসাইকেল রপ্তানি শুরু করেছে দেশের শীর্ষ মোটরসাইকেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। নেপালের সর্ববৃহৎ মোটরসাইকেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রমন মোটর্স পুরো নেপাল জুড়ে রানারের মোটরাইকেল বিক্রি করছে। এজন্য আগেই রানার অটোমোবাইলস রমন মোটর্সকে নেপালের ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগ করেছিল।

নেপালের কাঠমান্ডুতে ১৬ ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৮০ থেকে ১৫০ সিসির ৭ টি মডেলের মোটরসাইকেল উদ্বোধন করেন নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসফি বিনতে সামস, রানার রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান, রানার অটোমোবাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুকেশ শর্মা, রমন মোটরর্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রমন মেহতাসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।

রমন মোটর্সের সিইও রমন মেহতা বলেন, ‘আমরা এই অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনায় শোকাহত। নিহতরা আমাদের প্রশিক্ষনের জন্য কাঠমান্ডু এসেছিলেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানোসহ রানারের কর্মীদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে রমন মোটর্স।’ আমরা ইতিমধ্যেই নেপালে ১০টি ডিলার নিয়োগ দিয়েছি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নেপালে ২০টি শোরুম এবং সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার কাজ চলছিল। এই সব সার্ভিস সেন্টারে বিক্রয়োত্তর সেবায় দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রানার অটোমোবাইলস আমাদের সহযোগিতার জন্যই তিনজন মেধাবী কারিগরি প্রশিক্ষক পাঠিয়েছিলেন।