নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা

0
248

খুলনাটাইমস বিদেশ : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারতে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। অনেকেরই আশঙ্কা এবার হয়তো তাদের মায়ানমার পাঠিয়ে দেবে ভারত সরকার। এই মুহূর্তে রাজধানী দিল্লি-সহ দেশের একাধিক শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু রয়েছে।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি-সহ অন্যান্য রিফিউজি ক্যাম্পগুলিতে থাকা রোহিঙ্গাদের কাছে ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশন ফর রিফিউজিস’-এর (টঘঐঈজ) দেওয়া শরণার্থী পরিচয়পত্র রয়েছে। এমনই এক পরিচয়পত্র নিয়ে দিল্লির একটি শিবিরে রয়েছে ১৮ বছরের তরুণী রহিমা। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে পালিয়ে এসেছে সে। সংবাদমাধ্যমটির সঙ্গে কথোপকথনে ওই তরুণী জানায়, ছ’বছর আগে ভাইয়ের সঙ্গে ভারতে পালিয়ে আশ্রয়গ্রহণ করে সে। তারপর থেকে এদেশেই পাকাপাকিভাবে থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার। বার্মিজ সেনার অত্যাচারের কথা স্মরণ করে এখনও কেঁপে ওঠে রহিমা। সে জানায়, কয়েকদিন আগে পাড়ার এক মুদিখানার রেডিওতে নগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা ঈঅঅ’র বিষয়ে জানতে পারে সে। তারপর থেকেই তাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সে। দক্ষিণ দিল্লির এই ক্যাম্পেরই আরও এক বাসিন্দা ২২ বছরের সালাম। সে জানায়, রাখাইন প্রদেশে তুলাতুলি গ্রামে তার বাড়ি। বার্মিজ সেনার অত্যাচারে কয়েক বছর আগে মায়ানমার ছাড়তে হয় তাকে। তার কথায়, ‘আমরা সঙ্গে কিছু না নিয়ে প্রাণ হাতে করে পালিয়ে এসেছিলাম। এবার ভারতই আমাদের কাছে ঘর হয়ে উঠেছে। নয়া আইনের দরুণ আবারও কি আমাদের বাস্তুচ্যুত হতে হবে?” উল্লেখ্য, নগরিকত্ব সংশোধনী আইনে মায়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলা নেই। ফলে ওই সম্প্রদায়ের মধ্যে আশঙ্কা করার সঙ্গত কারণ রয়েছে। এছাড়াও, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। গত বছর অসমে আটক সাত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে মায়ানমার ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শুধু দিল্লি নয়, পশ্চিমবঙ্গ ও অসমেও অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি নিজেদের রিপোর্টে বলেছে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে জেহাদি সংগঠনগুলির যোগ ঠকার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব আইনে হিন্দু শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে প্রবল আপত্তি করলেও, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পক্ষ সওয়াল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত ভূষণের মতো রাজনীতিবিদরা।