নব্য এক কোটিপতির নির্দেশে চলছে হামলা-মামলা

0
388

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধিঃ খুলনার বটিয়াঘাটায় নব্য এক কোটিপতির নির্দেশে চলছে হামলা-মামলা, কারাগার অতপর উচ্ছেদ। এমন সব ঘটনা ঘটেছে উপজেলার সুরখালী গ্রামে দরিদ্র শুকুর আলীর পরিবারের উপর। বুধবার সরজমিনে যেয়ে দেখা যায় বটিয়াঘাটা-বারোআড়িয়া রাস্তার পার্শ্বেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীমানায় শুকুর আলীর মাটির দেয়াল আর টিনের ছাউনি দ্বারা তৈরী করা বসত ঘর ভাংচুর করা হচ্ছে। উঠানের পার্শ্বেই একটি কবর। ওখানেই ৫/৭ বছর আগেই ঘুমিয়ে আছে তার স্ত্রী। ৪ সন্তান নিয়ে প্রায় ৩০ বছর যাবত ওই স্থানে বসবাস করে দারিদ্র শুকুর আলী। কিন্তু সম্প্রতি ওই জায়গার পার্শ্বের মালিক এলাকার নব্য কোটিপতি হিসেবে খ্যাত মোতাহার হোসেন শিমু’র চোখে পড়ে। তার চাপে এবং ভয়ে ইতোমধ্যে মান্নান, রবিউল, খালেক এবং মালেক গাজী বসতভিটা ছেড়ে চলে গেছে। আজও তাদের বসতভিটার চিহ্ন রয়ে গেছে। কিন্তু একমাত্র বসতভিটা ছেড়ে যেতে নারাজ শুকুর আলী। শুরু হয় তাকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র। সোমবার সন্ধ্যা রাতে বাড়িতে ফেরার সাথে সাথেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শুকুর আলীর উপর হানা দেয় শিমু বাহিনী। বেদম মারপিট করে মাছ চুরীর অপরাধ দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। অল্পক্ষণে বটিয়াঘাটা থানা পুলিশ হাজির হয়ে তাকে নিয়ে যায়। পরের দিন একটি মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। আর এই সুযোগেই ভাংচুর করা হচ্ছে শুকুর আলীর বসতঘর। বুধবার সকাল ৮টার দিকে সরজমিনে দেখা যায়, শিমু বাহিনীর ডান হাত, বাম হাত হিসেবে খ্যাত মহিদুল, আলম, শহিদুলসহ ৫/৬ জন ভাংচুর করছে ঘরবাড়ি। উঠানে বসা বাকরুদ্ধ শুকুরের কন্যা ইশারায় মায়ের কবর দেখাচ্ছে, শালিকা চিৎকার করে কান্নাকাটি করে বলছে ওখানেই( এই মাটিতে) আমার বোনের কবর। ভ্যান বোঝায় মালামাল নিয়ে যাচ্ছে শুকুর আলীর পুত্র আছাবুর শেখ। প্রশ্ন করতেই চোখের পানি ছেড়ে বললো আর কত মার খাবো ওদের (শিমু বাহিনীর) কাছে। প্রতিবেশী পাপিয়া বেগম জানালো ১শ টাকা খরচ করে শুকুর আলীকে জেলখানায় দেখতে যাওয়ার সুযোগ নেই তার পরিবারের। কিন্তু কেন তাদের উপর এত অন্যায়, অত্যাচার-নির্যাতন। মোতাহার হোসেন শিমুর ব্যবহৃত ০১৭৮৭৪৬৩৫৪৯ মোবাইল নম্বরে ফোন করলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার ডানহস্ত হিসেবে পরিচিত আলম গাজী বলেন, ওই জায়গা শিমু সাহেবের বাপ-দাদার। আপনি কেন ঘরবাড়ি ভাংচুর করছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি শ্রমিকদের সহযোগীতা করছি মাত্র। শুকুর আলীর ভাই নিথুর শেখ বলেন, আমার ভাই কয়েক যুগ আগে শিমুর দাদা মৃত জহর গাজীর কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে লিখে নিয়েছে। ৩০ বছর এখানে বসবাস করছে, আজ সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকেও জেলে যেতে হবে। সুরখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেন বলেন, শিমু বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষ। দরিদ্র শুকুর আলী তার রোসানলের শিকার হয়ে কারাগারে, সেই সুযোগে তার ৩০ বছর যাবত বসবাস করা বসতঘর ভাংচুর করা হচ্ছে।

থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন,  এই ধরণের কোন অভিযোগ আমি পাইনি। ভূক্তভোগী অভিযোগ দিলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত দূঃখজনক। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।