নগরীতে জারের ‘দূষিত’ পানির রমরমা ব্যবসা

0
244

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত বিশুদ্ধ পানি। খুলনাতে এই বিশুদ্ধ খাবার পানির প্রবল সংকট কাজে লাগিয়ে রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছে অনেক অসাধু ড্রিংকিং ওয়াটার কারখানার মালিক।
জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে তোয়াক্কা না করে দূষিত খাবার পানি সরবরাহ করছে। বিএসটিআই’র বি.ডি.এস-১২৪০ নাম্বার কোথায় পেলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে দেশ পানি ড্রিংকিং ওয়াটারের মালিক মোঃ সরোয়ার আযম বলেন, “বিএসটিআই’র সারগো ম্যানেজ করে চলছি মাসিক মাসোয়ারা দিয়া থাকি। তিনি আরও বলেন, খুলনার ডাল মিলের পাসেই কৃষ্টাল ড্রিংকিং ওয়াটার, নিরালা ফ্রেশ ড্রিংকিং ওয়াটার, গোবরচাকা নজরুলনগর স্কুল রোডে জমজম ড্রিংকিং ওয়াটার, কৃষ্ণনগর রোডে এইচডি ড্রিংকিং ওয়াটার, বড় বাজারের ভিতর সূর্য ড্রিংকিং ওয়াটার ও আমতলা মোড়ে ঢাকা ড্রিংকিং ওয়াটার এদেরও অনেক সেশিনারিজ ও কাগজপত্র নাই সবাই বিএসটিআই’র সারগো ম্যানেজ করে এভাবেই চালায়। তাদের যাইয়া ধরেন।” আরো বলেন আমরা কারখানা থেকে দু’ধরনের পানি উৎপাদন করে থাকি। কারখানাগুলো বিশুদ্ধ পানির নাম করে জারের গায়ে নকল স্টিকার লাগিয়ে চড়া দামে বিক্রি করেন নগরবাসীর কাছে। ওয়াসা এবং ডিপ টিউবলের দূষিত ও জীবাণুযুক্ত পানি জারে ভরে বিক্রি করছে। এসব পানি পান করে নগরবাসী পানিবাহিত নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। চরম হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। কারখানাগুলোতে ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে প্রায় হাজার হাজার টাকা জরিমানা সহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিলেও খুলনাতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নামে-বেনামে, নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টি খাওয়ার পানির কারখানা রয়েছে। এসব কারখানা থেকে জারের পানি নগরের বাসাবাড়ি, দোকান-হোটেল, সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতে সরবরাহ করা হচ্ছে। নগরবাসী এসব পানি টাকা দিয়ে কিনে বিশুদ্ধ মনে করে কোনো ধরনের প্রশ্ন ছাড়াই পান করছে। তারা জানে না এসব পানি উৎপাদনে বিএসটিআই অর্পিত কোনো মান বজায় রাখা হচ্ছে কিনা। খালিশপুর হোটেল মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জারের পানি টাকা দিয়ে কিনে খাই। তবে কোথাকার পানি কোথায় তৈরি হয়। জানার কোনো উপায় নেই বলে জানান এ হোটেল মালিকএদিকে দূষিত পানির অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় ভেজালবিরোধী অভিযান চালালেও মানছেনা কারখানাগুলোর মালিকরা। শাস্তি ও জরিমানার পরও বন্ধ করা যাচ্ছে না ব্যবসা। নগরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানি নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। সুপেয় পানি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মান যাচাইয়ে শর্ত হিসেবে বিএসটিআই’র পক্ষ থেকে রয়েছে ৩০ ধরনের পরীক্ষা পদ্ধতি। এসব পদ্ধতি নিশ্চিত হওয়ার পর পানি বাজারজাতকরণের অনুমতি দেয় রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি বাজারজাতকরণের অনুমোদনের পর কারখানায় রসায়নবিদ, কর্মীর সুস্বাস্থ্যের সনদ ও ল্যাব থাকার কথা। এসব মান বজায় না রেখে অবৈধভাবে পানি উৎপাদনের দায়ে বিভিন্ন কোম্পানি কে লাখ লাখ টাকা জরিমানা করা এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্ত খুলনাতে বিএসটিআই’র নিজেস্ব নেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এমনকি লোকবল কম থাকা ভেজালবিরোধী অভিযানও চালাতে পারছেন না অভিযান চালানোর জন্য আবেদন করতে হয় ডিসি অফিসে। জানান সহকারী পরিচালক (সিএম) জিশান আহামেদ তালুকদার।