দাকোপে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

0
1647

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস :
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় খুলনার দাকোপ উপজেলার কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য ১০টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির তালিকা প্রণয়ন ও চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন (ইউপি) সদস্য ও বাছাই কমিটির সদস্যদের স্বজনপ্রীতির জন্য ওই চাল বিত্তবানদের ঘরে যাচ্ছে বলে অনেকের অভিযোগ। এ ছাড়া ওই ইউনিয়নের ডিলারের বিরুদ্ধে রয়েছে ওজনে কম দেওয়াসহ নানা অভিযোগ।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময় মতো ডিলারের কাছ থেকে চাল পাওয়া যায় না। জনপ্রতি ৩০ কেজি না দিয়ে মজুদঘরের বাহিরে বস্তার মুখ খুলে কার্ডধারীদের মাঝে ২৮ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের হরিণটানা মধ্যপাড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল(৪৮) নামের একজন কার্ডধারী ডিলারের কাছে চাল নিতে এলে ৩০ কেজিতে তিনশ টাকার পরিবর্তে অতিরিক্ত ১০ টাকা আদায় করার অভিযোগ আনেন। এ সময় কার্ডধারীরা অনেকেই অতিরিক্ত ১০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ করেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের তোপের মুখে ওই টাকা ফেরত দেয়া হয় এবং নিয়মানুযায়ী বিতরণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের পাশে ওই কর্মসূচির ডিলারের চাল রাখার মজুদঘর। সেখান থেকে উপকারভোগিদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রূপক রায়। তিনি জানান, ওজনে কম দেওয়া ও অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে ঘটনাস্থলে আমি প্রতিবাদ করেছি এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অব্যহিত করেছি।

হরিণটানা গ্রামের মালতি মণ্ডল(৪২) নামের এক বৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, ডিলারের কাছে সময় মতো এসে চাল না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। এছাড়া ডিলারের কর্মচারীদের কাছ থেকে ২৮ কেজি চাল বাড়ি গিয়ে ওজন করে দেখা যায় প্রায় ২৬ কেজি থাকে। ডিলারের কর্মচারী শঙ্কর বাইন জানান, চালের বস্তায় ওজনে কম পাওয়ায় উপকারভোগিদের মাঝে ওজনে কম দিয়ে বিতরণ করা হয়। তিনি আরও জানান, ওই ডিলারের কাছ থেকে ৫১৬ জন কার্ডধারী চাল উত্তোলন করেন। এরমধ্যে শনিবারে (২২ এপ্রিল) ৭২ জন কার্ডধারী চাল নিয়েছে।

এদিকে অতিরিক্তি টাকা আদায় ও ওজনে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের ডিলার মাসুদ খানের বিরুদ্ধে। তবে মাসুদ মুঠোফোনে খুলনাটাইমসকে বলেন, আমি কখনোই চাল কম দেয়নি। অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলার বলেন এলাকার বাহিরে থাকায় ওখানে কি ঘটেছে তা আমার জানা নেই। তিনি আরও বলেন, কয়েকজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে আমার বিরোধ থাকায় এমন মিথ্যা অভিযোগও দিতে পারে।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিন্ধু রায় বলেন, অনিয়মের অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদের সব সদস্যরা ওই ডিলারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ওই ডিলার এখনও পর্যন্ত কোনো ধরণের অনিয়ম বন্ধ করেনি। তিনি আরও বলেন, শনিবার চাল বিতরণে অনিয়ম হলে কয়েকজন ইউপি সদস্য তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ কাজ বন্ধ করায়। পরে সঠিক নিয়মে ১৯জনকে চাল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চাল বিতরণের সময়ে ট্যাগ অফিসার সেখানে থাকেন না বলে দাবি করেন তিনি।

বিষয়টি জানার জন্য দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদের মুঠোফোনে সন্ধ্যায় বারবার কল করলে সেলফোন বেঁজে গেলেও ধরেনি। যার ফলে ইউএনওর বক্তব্য তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।