তীব্র শীত ও ঘণ কুয়াশায় পাইকগাছায় সংশয়ে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা

0
365

শেখ নাদীর শাহ,কপিলমুনি॥
পাইকগাছায় প্রচন্ড শীত ও ঘণ কুয়াশায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বোরো আবাদ। ইতোমধ্যে বীজতলার চারা লাল হতে শুরু করেছে। বীজতলা টিকিয়ে রাখতে কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও অঞ্চল ভেদে নিজ নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতিদিন বিকাল থেকে পরের দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত পলিথিন বা ট্রিফল দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখছেন অনেকে। এছাড়া শীতের তীব্রতা থেকে বীজতলাকে উষ্ণ রাখতে প্রতিনিয়ত পানি বদল করছেন কৃষকদের সিংহভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ৪ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এলক্ষ্যে ২২০ হেক্টর জমিতে তৈরী হয়েছে বোরোর বীজতলা। তবে শুরুতেই শীতের তীব্রতায় এখনো শুরু হয়নি বোরো আবাদ।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিবেশে গত বারের ন্যায় এবারো উপকূলীয় অঞ্চলের বোরোর আবাদ মূলত কিছুটা দেরীতে শুরু হচ্ছে। এর ফলে ব্যবধান তৈরী হয়েছে অন্যান্য এলাকার সাথে পাইকগাছার বোরো আবাদের।
ভূক্তভোগী কৃষকরা জানান, শুধু শীতের বোরো আবাদই নয়, পিছিয়ে গেছে মৌসুমী প্রায় সব আবাদই। সূত্র জানায়, উপজেলার অনেক এলাকায় এখনো চলছে আমন ধান কর্তন। ধান কাটার পর এসব ক্ষেত বোরো আবাদের জন্য প্রস্তুত করতে সময় লাগবে এক থেকে দু’সপ্তাহ। কৃষকদের পাশাপাশি কৃষি অফিসও জানায়,সুন্দরবন উপকূলীয় লবণ পানির জনপদে আবহাওয়ার প্রতিকূলতাকে সামনে রেখেই ফসল উৎপাদনে মাঠে নামতে হয় কৃষকদের। সেক্ষেত্রে বীজতলা দফা বাড়ে কখনো কখনো।
উপজেলার গদাইপুর,হরিঢালী ও কপিলমুনি এলাকার বিভিন্ন বিলাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, শীতের তীব্রতায় অনেক ক্ষেতের বীজতলার চারা লাল হয়ে মারা যাচ্ছে। একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে দেরীতে মৌসুম শুরু তার উপর বীজ তলা নষ্ট হওয়ায় নতুন করে বীজতলায় চারা প্রস্তুত করতে করতে আবাদ মৌসুমে শুরু হয়েছে বিস্তর ফারাক। পাইকগাছার বাইরে অন্যান্য এলাকায় যখন বোরো ধান ফুলে যায় তখনও এ অঞ্চলে চলে আবাদ। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের অনেকে বীজতলা পলিথিনে ঢেকে ও পানি বদলে রক্ষার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হচ্ছেন। অবস্থাদৃষ্ঠে মনে হচ্ছে, বোরো আবাদে এবার সময় ক্ষেপনের পাশাপাশি তৈরী হয়েছে আবাদ অনিশ্চয়তা। আর এমনটি চলতে থাকলে চলতি বছর লক্ষমাত্রা অর্জিত হবেনা বোরো আবাদের।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে কৃষকদের বীজতলা ঢেকে রাখতে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া স্ব-স্ব এলাকার উপ-সহকারী কৃষিকর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রতিদিন পানি বদল করার জন্যও তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তবে শীত কমলে বোরোর চারা রোপন করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে বলেও দাবি এ কর্মকর্তার।