তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত

0
416

সেলিম হায়দার :
অবশেষে সাতক্ষীরার তালা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন দূর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে দূর্নীতি দমন কমিশন ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। এর আগে বিভিন্ন জাতীয়,আঞ্চলিক ও অনলাইন দৈনিকে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তথ্য বহুল ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত ১ জুলাই যশোর সিভিল সার্জন ডাঃ দিলীপ কুমার রায় স্বাক্ষরিত সিএসজে/এস-১/২০১৮ নং স্মারকে প্রেরিত এক পত্রে বিষয়টি উঠে এসেছে। এদিকে তদন্ত কার্যক্রমকে বিঘিœত করতেও হাসপাতাল কতৃপক্ষ শুরুতেই শঠতার আশ্রয় নিয়েছে। পত্রানুযায়ী রবিবার ১ জুলাই সকাল ১০ টার সময় উপরোক্ত দপ্তরের প্রতিনিধির নেতৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয়ে তদন্ত বোর্ডে সাংবাদিকদের পক্ষে তালা প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রনব ঘোষ বাবলুকে উপস্থিত থাকতে বলা হলেও ঐ দিনই নির্দিষ্ট সময়ের ১ ঘন্টা পর সভাপতির নিকট ঐ চিঠির অনুলিপি কপি নিয়ে যাওয়া হয়। ঐসময় তিনি বাসায় না থাকায় তার স্ত্রী চিঠি গ্রহন করেননি বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক প্রনব ঘোষ বাবলু। খবর পেয়ে পরে প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম বেলা ১১ টা ৪৩ মিনিটে সেখানে উপস্থিত হলে তদন্ত কর্মকর্তা পুনরায় আগামী ৯ জুলাই একই কার্যালয়ে পুনঃতদন্ত তারিখ নির্ধারণ করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত আরেকটি চিঠি ইস্যু করা হয়। যার স্মারক নং উঃস্বাঃকমঃতালা/সাত/শা-১/২০১৮/১২৪৮.তাং ১/৭/২০১৮।
এর আগে যশোর সিভিল সার্জন ডাঃ দিলীপ কুমার রায় স্বাক্ষরিত স্মারক পত্রে সূত্র স্বাঃ অধিঃ/শৃংখলা-৩৭/১৮/২০৪৬,৭/৫/১৮ তারিখের বরাদ দিয়ে জানানো হয়,বিভিন্ন পত্রিকায় তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে গত ২ এপ্রিল ১৮ তারিখের দূর্নীতি দমন কমিশন,ঢাকা বাংলাদেশ এর স্মারক নং ০০.০১.০০০০.৫০৩.২৬.১০৮.১৮-১০৯৮৬ ও একই তারিখে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রশাসন-১ অধিশাখা,বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্মারক নং ৪৫.০০.০০০০.১৩৭.২৭০০১.১৭(অংশ-১)/৪৮২ নং দু’টি স্মারকে তাকে এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিভন্ন জাতীয়,আঞ্চলিক ও অনলাইন দৈনিকে তালা হাসপাতালের সার্বিক স্বাস্থ্য চিত্র ও সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে নিয়ে তথ্য বহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংশ্লিষ্টদের বিচারের দাবি ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তারের দাবিতে তালা প্রেসক্লাবের পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচীও পালন করা হয়। রোগী সাধারণের সাথে অসদাচারণ,এ্যাম্বুলেন্সে রোগীদেও কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়,ক্যাশিয়ারের খবরদারী ও অর্থ গ্রহন,রোগীদের খাদ্য সরবরাহে দূর্নীতি,কোয়ার্টার নিয়ে কারচুপি,পোস্টিং নিয়েও দীর্ঘ দিন যাবৎ অফিস না করেও বেতন উত্তোলন থেকে শুরু করে উঠে আসে হাসপাতালের নানাবিধ অসংগতির কথা। এক পর্যায়ে হাসপাতালে সংবাদপত্র প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন,কতৃপক্ষ। স্থানীয় সাংবাদিকদের কোন প্রকার তথ্য প্রদান বন্ধের মত ঔদত্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েও বহাল থাকেন তারা। অথচ এত কিছুর পরও ঐসময় টনক নড়েনি স্থানীয় প্রশাসনের। সর্বশেষ উপজেলার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে তদন্ত বোর্ডের খবরে নতুন করে স্বস্থি ফিরেছে জনমনে।