জানুয়ারিতেই নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন চান ইলিয়াস কাঞ্চন

0
177

টাইমস ডেস্ক:
নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কাঞ্চন। তিনি বলেছেন, ‘হতাশার বিষয়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর প্রয়োগের দিন থেকেই নতুন সড়ক পরিবহন আইন হোঁচট খেয়েছে। আইনটির যথাযথ প্রয়োগে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবহন সেক্টরের একটি অশুভ শক্তি। যদিও জনগণের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইনের সংস্কার আমাদের দাবি ছিল। আমরা পয়লা জানুয়ারি থেকেই নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন চাই।’ গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রুত আইনটির বাস্তবায়ন দাবি করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সরকারও বিভিন্ন সময় ১৯৮৩ সালে প্রণীত আইনটিকে সময়োপযোগী করার উদ্যোগও নেয়। অনেকটা সময় পেরিয়ে সড়কের বিশৃঙ্খল অবস্থার বাস্তবচিত্র এবং গত কিছুদিনের বেশ কয়েকটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন এ আইনটি পাসের প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী, বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ এবং দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানো রাজীবের মর্মান্তিক মৃত্যু উল্লেখযোগ্য। অবশেষে কোনও চাপের মুখে নতি স্বীকার না করে সরকার এ আইনটি জাতীয় সংসদে পাস করে ২০১৮ সালে। এর প্রায় ১৫ মাস পর ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে আইনটি কার্যকর শুরু করে সরকার। প্রথম ১৪ দিন সহনীয় মাত্রায় এর প্রয়োগ ছিল। এরপর পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবিতে আইনের কয়েকটি বিষয় পরবর্তী ছয় মাস পর্যন্ত কনসিডারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরবর্তীতে করোনার কারণে এই আইন যথাযথ প্রয়োগ সময়সীমা বৃদ্ধি করে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।’ আইনটি প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি করা প্রসঙ্গে কাঞ্চন বলেন, ‘একটা কথা বলতে দ্বিধা নেই, সরকার নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রয়োগে যখনই উদ্যোগ নেয় তখনই পরিবহন সেক্টরের সেই চক্রটি বাধা সৃষ্টি করে। তারা নতুন করে নানা ধরনের দাবি-দাওয়া তুলে ধরে। শুধু তাই নয়, গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে দেয়। এমনকি আমাকে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হয়। আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। যা সত্যিই দুঃখজনক। আমি বলবো, নতুন আইনের বিষয়ে তারা কোনও পস্তু‘তি ইচ্ছে করেই নেয়নি এবং নিচ্ছে না। তারা শুধু দোষারোপ করে গেছে তাদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য। সময় থাকতে গাড়ির লাইসেন্স, ফিটনেস এবং গাড়ির আকৃতি পরিবর্তনজনিত অনিয়ম ও ক্রটিগুলো সংশোধনে তারা মনোযোগ দেয়নি। এসব ক্রটি-বিচ্যুতি যদি তারা নতুন আইন প্রয়োগের আগেই সমাধান করতো তাহলে নতুন করে আইনের কয়েকটি বিষয় ছাড়ের সময়সীমা আর বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আইন বাস্তবায়নে সরকারের যেসব স্টেকহোল্ডার রয়েছে, সেখানেও এক ধরনের শৈথিল্য লক্ষ করছি। এই আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব যেমন আছে তেমনি সরকারের সেইসব মহলেরও নানা পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি। বিশেষ করে, এই আইনটি প্রয়োগে মাঠে সক্রিয় থাকবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের পূর্ণ প্রস্তুত করতে প্রথমেই আসে যে মেশিন সেটার আপডেট করা (বর্তমান আইন অনুযায়ী) প্রয়োজন।’