খুলনা নগরপিতার দায়িত্ব গ্রহন অনুষ্ঠান বর্জন বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর ও বিদায়ী মেয়রের

0
398

নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) নবনির্বাচিত মেয়রের দায়িত্ব গ্রহন অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন বিদায়ী মেয়র ও বিএনপিপন্থি নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা।
মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় বিদায়ী মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে নব-নির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের দায়িত্ব গ্রহণের কথা ছিলো। অনুষ্ঠান শুরু হলেও বিএনপিপন্থি বিদায়ী মেয়র ও নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা উপস্থিত হননি। বিষয়টি নিয়ে উপস্থিত সকলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
আব্দুল খালেকের নগর পিতার আসনে আসীনের বর্ণিল অনুষ্ঠানে খুলনা ও বাগেরহাটসহ পার্শ্ববর্তী জেলার সংসদ সদস্য, বিভিন্ন সিটির মেয়রসহ আমন্ত্রিত ৪০০ অতিথি উপস্থিত রয়েছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির প্রথম যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, কেসিসির নবনির্বাচিত মেয়রের দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিদায়ী মেয়র ও বিএনপি সমর্থিত ১১জন কাউন্সিলর। দুপুরে মহানগর বিএনপির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। ভোট ডাকাতির নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় মেয়রের দায়িত্বগ্রহন অনুষ্ঠান বর্জন করা হলো।
সাংগঠনিক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এ সভায় বিদায়ী মেয়র মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানসহ বিএনপিপন্থি নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তারিকুল ইসলাম ।
মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ভোট ডাকাতির নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার অভিযোগে বিএনপি এ অনুষ্ঠান বর্জন করেছে।
জানা গেছে, বিদায়ী মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কান্তি বালার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আনারস প্রতীকে ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৩ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক তালা প্রতীকে পান ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২২ ভোট। মনি ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। এরপর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানসহ তার পর্ষদ ২১ সেপ্টেম্বর শপথ গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় ওই মাসের ২৬ তারিখ।
মনি খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি বেশি দিন। হামলা-মামলা, জেল খেটে সাময়িক বরখাস্ত হয়ে সময় কেটেছে তার অধিকাংশ সময় দিন। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাঁধা ও নাশকতার অভিযোগে মামলা রয়েছে ।
৫ বছর কর্পোরেশন পরিচালনা শেষে এই পর্ষদের মেয়াদের তিন মাস আগে গত ১৫ মে কর্পোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু ধানের শীষ প্রতীকে পান ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট। আর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ৬৫ হাজার ৬০০ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন।
৫ জুলাই কেসিসির নবনির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলররা শপথ গ্রহণ করেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আবদুল খালেককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ বাক্য পাঠ করান। আর স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ সিটির নবনির্বাচিত ৪১ জন কাউন্সিলরকে শপথ বাক্য পাঠ করান।