খুলনায় নৌকার টিকেট পেলেন পঞ্চানন-জুয়েল-মন্নুজান-মুর্শেদী-নারায়ণ-বাবু

0
1776

এম জে ফরাজী : খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনেই প্রার্থী দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এদের মধ্যে দু’জন প্রার্থী এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বর্তমান দুই সংসদ সদস্যের কপাল পুড়েছে। এমপি থাকাকালীন সময়ে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, অভিযোগের কারণে তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। মহাজোটের শরিকদল জাতীয় পার্টি খুলনা থেকে ২টি আসন দাবি করলেও তাদের দেওয়া হয়নি কোন আসন। ফলে ৬টি আসনেই নৌকার প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস। যিনি ২০১৪ সালের আগে ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার আগে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেড়ে দেওয়া আসনে উপ-নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন।
খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। যিনি এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। রাজনীতিতে তিনি নতুন হলেও খুলনাঞ্চলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া তার বড় ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন এ অঞ্চলের আওয়ামী রাজনীতির অন্যতম নীতি-নির্ধারক। শেখ জুয়েলকে মনোনয়ন দেওয়ায় এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন।
খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন শ্রমিক নেত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। যিনি এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি বর্তমান সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন সাবেক তারকা ফুটবলার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মুর্শেদী। এবারের নির্বাচনেও দল তার উপর আস্থা রেখেছে। আসন্ন নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করবেন।
খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসন থেকে নৌকা প্রতিক নিয়ে আবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। যিনি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তৎকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও পরে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সালাহউদ্দিন ইউসুফের মৃত্যুর পর ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হলেও ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন।
খুলনা-৬ (কয়রা ও পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু। যেটি খুলনায় প্রার্থী মনোনয়নে সবচেয়ে বড় চমক। বর্তমান সংসদ সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রী অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টাকে হটিয়ে তিনি দলের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। জানা গেছে, বিতর্কিতমূলক নানা কর্মকাণ্ডের কারণে বর্তমান সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ নুরুল হককে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, রবিবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের প্রাথমিক প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এই চিঠি বিতরণ শুরু হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ৩০০ আসনের মধ্যে এদিন ‘২৩০টির মত’ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীতদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হবে সোমবার।