খুলনায় নিয়ন্ত্রণহীন ওষুধবাজার, দিশেহারা ক্রেতারা

0
199

টাইমস ডেস্ক :
খুলনা নগরীর ফার্মেসিগুলো মেতে উঠেছে গলাকাটা বাণিজ্যে। কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে বাড়ানো হচ্ছে বিভিন্ন ওষুধের মূল্য। বেক্সিমকোর নাপা, স্কয়ারের ফেক্সো, জিমেক্স, সিভিট ট্যাবলেটের দাম এই তালিকায় আছে অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিম্যালেরিয়াল ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধসহ জীবাণুনাশক সামগ্রীর মূল্য। যেখানে ফ্যামেলি সাইজের স্যাভলনের মূল্য আগে ছিলো ২২০ টাকা এখন তা বিক্রয় হচ্ছে চারশ টাকা।
কারণ সচরাচর মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া হঠাৎ করে প্যারাসিটামল, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিম্যালেরিয়াল, ভিটামিন সি ট্যাবলেট ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ওইসব ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে করে নগর ও জেলার নিম্ন আয়ের রোগীদের ওষুধ ক্রয় করতে যেয়ে ফার্মেসিতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনে। ফার্মেসির মালিকদের সাথে বাকবিতুার সৃষ্টি হচ্ছে। সর্দি জ্বরের জন্য নরসল ১৫ টাকা থেকে বেড়েছে ২০ টাকা, রেবিপ্রাজল-২০ এমজি প্রতি ট্যাবলেট ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা এবং বাইজুরান ট্যাবলেট ৭ টাকা থেকে ১২ টাকা করা হয়েছে। টোফেন ট্যাবলেট ২ টাকা থেকে ৩ টাকা, টোফেন সিরাপ ৫৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৫ টাকা, সেপটন ইনজেকশন-১ গ্রাম ১৯০ টাকা থেকে বেড়েছে ২৫০ টাকা, ক্যাটো রোলাক-১০ এমজি ট্যাবলেট ১০ টাকা থেকে বেড়েছে ১২ টাকা, মডিগাট-১০ এমজি ট্যাবলেট ২ টাকা থেকে বেড়েছে ৩ টাকা, এসিফিক্স-২০ এমজি ট্যাবলেট ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা, মেক্সপ্রো-২০ এমজি ট্যাবলেট ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা করা হয়েছে।
নগরীর বাসিন্দা জুয়েল বলেন, আমার প্রতিদিন গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণে দুটি করে ম্যাক্সপ্রো ট্যাবলেট লাগে, আগে ১০ পিস এক পাতা ক্রয় করতাম মাত্র ৬০ টাকায় এখন ক্রয় করতে হচ্ছে ৭৫ টাকা করে পাতা। তাছাড়া আগে দোকানে দোকানে স্যাভলন পাওয়া যেত এখন কোনো দোকানে স্যাভলন বা ডেটল লিকুইড পাওয়া যাচ্ছে না। একমাত্র নগরীর হেরাজ মার্কেটে পাওয়া যায়। যা আগের তুলনায় অতিরিক্ত তিনগুণ থেকে চারগুণ দাম রাখা হচ্ছে।

খুলনা সিভিল সার্জন বলেন, এভাবে করোনার সঙ্কট সময়ে ওষুধের মূল্য বেশি রাখা বিশেষ করে সুরক্ষা সামগ্রীর মূল্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্যাভলন এর মূল্য এবং গ্যাস্ট্রিক এর ওষুধসহ বিভিন্ন প্রকারের ওষুধ এর মূল্য অতিরিক্ত রাখা হচ্ছে, এটা করা কখনও উচিত না। তাছাড়া আমরা তো এই বিষয়ে নজরদারি করতে পারি না। এটা স্থানীয় ওষুধ প্রশাসন এর কাজ তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বেক্সিমকো ফার্মার টেরিটরি প্রতিনিধি বাপ্পি রহমান বলেন, আমার জানা মতে এখনও আমাদের কোম্পানি কোনো প্রকার ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করেনি। তাছাড়া যে সকল ফার্মেসি ওষুধের মূল্য বেশি রাখছে সেটা তারা জানে কি কারণে করছে। শহিদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের সামনে রাহিম মেডিসিনের মালিক বলেন, টুকটাক প্রায় অধিকাংশ ওষুধের দাম বেড়েছে। আমরা খুচরা বিক্রেতা কি করে বলব দাম বেশি বাড়ার কারণ কি।
শহিদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের অর্থপেডিক চিকিৎসক তোফাজ্জেল হোসেন খুলনা টাইমসকে বলেন, বর্তমান যে ওষুধের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে এটা স্থানীয় ফার্মেসিগুলো নিচ্ছে। আমার মনে হয় এখনও কোনো ওষুধ কোম্পানি দাম বাড়ায়নি। যদি বাড়তো জানতাম। তবে এই করোনার সঙ্কট সময়ে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ওষুধের মূল্য নেওয়া অযৌক্তিক এবং এই ফার্মেসিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্যা নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে খুলনা ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ের সহ-পরিচালক মনিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ওষুধের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে ক্রেতাদের কাছে অনুরোধ ফার্মেসি থেকে ওষুধ ক্রয়ের সময়ে ওষুধের প্যাকেটে যে মূল্য নির্ধারণ থাকবে তার থেকে অতিরিক্ত কোনো টাকা যেন না দেয়।
সূত্র: যায়যায় দিন