খুলনায় উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা বাড়ছে

0
883

এম জে ফরাজী : খুলনার ৯টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আগামী ৩১ মার্চ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আশরাফুল আলম খান ও ফুলতলায় উপজেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি সব উপজেলায় দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। দলের প্রার্থীর বাইরেও বেশিরভাগ উপজেলায় রয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা নিজেদের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছেন সহিংসতায়। গত কয়েকদিনে ডুমুরিয়া ও কয়রা উপজেলায় দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে আতংক ছড়িয়ে পড়ছে অন্যসব উপজেলায়ও।
জানা গেছে, কয়রায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নৌকা প্রতিকের প্রচার করায় সমর্থকের বাড়ী ঘর ভাংচুর করেছেন প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা। এ ঘটনায় ১৪ জনকে আসামী করে কয়রা থানায় মামলা করেছেন উপজেলার শ্যামখালী গ্রামের নুর মোহাম্মাদ গাজীর স্ত্রী জাহানারা খাতুন (৩২)।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ১৫ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে ২০/২৫ জন যুবক নৌকার বিপক্ষে মিছিল সহকারে এসে দা, কুড়াল দিয়ে বাদী জাহানারার ঘরবাড়ী কুপিয়ে ভাংচুর করেন। এসময় বাধা দিতে গেলে আসামীরা বাদীকে ব্যাপকভাবে মারপিট করেন এবং ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জাহানারা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাদী হয়ে ১৭ মার্চ কয়রা থানায় এজাহার করেছেন। যার নং ১২/১৯।
এদিকে গত সোমবার রাত ৯টার দিকে ডুমুরিয়ার চুকনগর বাজারে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের (আ’লীগের দুই গ্র“পের) মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ারের সমর্থক আশরাফ গাজি (৪০), খায়রুল শেখ (৩৫), ইশারুল (২৪), স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী এজাজ আহমেদের সমর্থক ইসলাম (৩০), ইকবাল গাজী (২০), গফুর গাজী (৩৫) ও মফিজ গাজী (৩২)। এর মধ্যে আশরাফ গাজীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, চুকনগর বাজারে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে উভয়গ্র“পের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয়গ্র“পই ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এতে ৭/৮জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে তিনজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে প্রায় একই সময়ে ডুমুরিয়ার চিংড়া মোড় ও শাহপুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চিংড়া এলাকায় নৌকা প্রতিকের নির্বাচনী কার্যালয় দখল করে নিয়েছে ঘোড়া প্রতিকের সমর্থকরা বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও বটিয়াঘাটা, তেরখাদা, ফুলতলা ডুমুরিয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা এম মাজাহারুল ইসলাম জানান, ‘সংঘর্ষের বিষয়ে কোন প্রার্থী এখন পর্যন্ত লিখিতভাবে আমাকে অভিযোগ দেয়নি। দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানাতে পারতাম।’
তিনি আরও জানান, ‘বুধবার খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সকল প্রার্থীদের ডাকা হয়েছে। সেখানে জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের সাথে মতবিনিময় করবেন। কেউ যাতে আচরণবিধি ভঙ্গ না করেন এ বিষয়ে চূড়ান্তভাবে জানানো হবে। তারপরও কেউ না মানলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’