খালিশপুরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার দাবি সংসদে

0
160

নূর হাসান জনি
খুলনা শিল্পাঞ্চলের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে খুলনার খালিশপুরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার দাবি উঠেছে সংসদে। ৫ জানুয়ারি সোমবার সংসদের স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ দাবী উত্থাপন করেন খুলনা ৩ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ দাবি তোলেন।
তিনি আরো বলেন খুলনা শিল্পাঞ্চল একসময় সমৃদ্ধ শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক শিল্প কলকারখানা বন্ধ করে দেয় এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে তাড়িয়ে দেয়। ২০০৮ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আসার পর পুনরায় মিল কারখানা চালু করেন, মিল কয়েক বছর চলেওছিল। সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিল বন্ধ করতে বাধ্য হন। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ এবং সঞ্চয় পত্র করে দেয়া হয় যাতে করে ওই সঞ্চয় পত্রের লভ্যাংশ থেকে শ্রমিকরা চলতে পারে।
এদিকে সম্প্রতি খুলনা মহানগরীর একটি অভিজাত হোটেলে কাস্টমস দিবসের আলোচনায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর আ’লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনার মৃত শিল্পাঞ্চাল পূনরুজ্জীবিত করতে খুলনার বন্ধ করে যাওয়া মিল কারখানার জায়গায় ইপিজেড করার ইঙ্গিত দেন।

খুলনা শহর এখন বিশাল সমস্যায়। একদিকে আগের শ্রমিকগুলো বেকার হয়ে পড়ছে। তারপর প্রতিনিয়ত প্রতিদিন বেকার বেড়ে চলেছে। খুলনার জনসংখ্যা ভিড় জমাচ্ছে অন্য শহরে। বিশেষ করে তারা বেছে নিচ্ছে দেশের রাজধানী ঢাকাকে। ফলে প্রতিনিয়ত ঢাকায় চাপ বাড়ছে। রাজধানীও এখন বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
সমস্যার কোনো অন্ত নেই। এর সমাধানে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে মিল-কারখানার প্রতি। বন্ধ হওয়া কলকারখানাগুলো পুনারয় চালু করতে হবে। তাহলে হয়তো খুলনা শহর পুরোনো ঐতিহ্যেই ফিরে আসতে পারবে।
বন্ধ মিলকারখানা পুনরায় চালু করা গেলে হাজারো মানুষের জীবিকার সন্ধানে আর ছুটতে হবে না। কোনো পরিবারকে আর খুলনা ছাড়তে হবে না। শিল্পকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, একটা বড় কারখানাকে কেন্দ্র করে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা গড়ে উঠে, যা অনেক পরিবারকে সচ্ছল করে।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন ৯টি পাটকল রয়েছে খুলনা অঞ্চলে। এর মধ্যে খুলনা শহর ও তার আশপাশের এলাকায় স্থাপিত সাতটি পাটকল। দ্য ক্রিসেন্ট জুট মিলস, প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস, খালিশপুর জুট মিলস ও দৌলতপুর জুট মিলস খালিশপুরের ভৈরব নদীর তীরে পাশাপাশি স্থাপিত। নদীর অপর পাড়ে দিঘলিয়ার চন্দনীমহল এলাকায় অবস্থিত স্টার জুট মিলস। এছাড়া আলীম ও ইস্টার্ন জুট মিলস রয়েছে শহরের বাইরে ফুলতলা উপজেলায়।