কয়রায় ঘরে ঘরে জ্বর,করোনা সনাক্তের হার উর্ধমূখী

0
266

কয়রা প্রতিনিধি:

খুলনার কয়রায় বাড়ছে জ্বরের প্রাদুর্ভাব। এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে পরিবারের সবাই। তবে এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। আশংকাজনক হারে জ্বরের রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারণের মাঝে করোনা ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা রোগীর সংখ্যা।

করোনা আক্রান্তের ভয়ে অনেকেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বাড়িতেই গোপনে নিজের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন ওষুধের দোকানদাররা জানান গত কয়েক দিনে সর্দি ,জ্বর,কাশি, শ্বাসকষ্ট ও গলা ব্যাথার ওষুধ বিক্রি হয়েছে স্বাভাবিকের চাইতে কয়েকগুন বেশি। এসব রোগের ঔষুধ সরবরাহ কম থাকায় প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ জন রোগী করোনা পজিটিভ হয়েছেন। উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১৪৮ জন।উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মারা গেছেন ৭ জন। সর্দি জ্বর, গলা ব্যাথা নিয়ে গত সাত দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৩০ জন রোগী। জ্বরসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ২০ থেকে ৩০ জনের মতো রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলায় করোনা সনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। পুরো উপজেলায় হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় প্রসাশন। চলছে কঠোর লকডাউন। এরই মধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণও করেছেন বেশ কয়েকজন। করোনার নমুনা দিতে মানুষের অনীহা থাকায় উপজেলায় করোনা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে পারছেনা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

কয়রা সদর ইউনিয়নের আব্দুল করিম (৪৫) ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের করিম মিয়া (৩০) বলেন আমরা ৪/৫ দিন থেকে জ্বর ও সর্দিতে ভূগছি। জ্বরে কাহিল হয়ে পড়েছি। বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি আমরা। কয়রা সদর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী এস এম বাহারুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় অনেক মানুষের জ্বর ও সর্দি হওয়ার খবর পাচ্ছি। তাদেরকে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার জন্য বলছি। মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন লাভলু জানান, ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ জ্বরে ভুগছেন। ইউনিয়নটিতে দীর্ঘদিন জ্বরে ভুগে একব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন।

উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুদীপ বালা জানান, উপজেলায় হঠাৎ করে করোনা প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে এলাকার জনসাধারণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনীহা ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বিভিন্ন পথে উপজেলায় লোক আশা ও তাদেন অবাধ চলাচলে।তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তদারকিতে আক্রান্তরা নিজ নিজ হোম আইসোলেশন এ চিকিৎসাধীন আছেন।

তিনি বলেন করনা থেকে রক্ষা পেতে হলে সচেতনতা জরুরি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, করণা নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসন ২২ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত লকডাউন নিশ্চিত করতে কঠোর কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন থেকে করোনা আক্রান্তের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তাদেরকে শুকনা খাবার ও ফল দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নেওয়ায় উপজেলা প্রশাসন থেকে সতর্কতা মূলক প্রচারণা করা হচ্ছে ।