করোনায় আরও ৩৩ মৃত্যু, নতুন করে আক্রান্ত ২১৭৪ জন

0
190

খুলনাটাইমস: মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন এবং নারী চারজন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার হাজার ২৮১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ১৭৪ জন। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিন লাখ ১২ হাজার ৯৯৬ জনে। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ৮৯০ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল দুই লাখ চার হাজার ৮৮৭ জনে। গতকাল সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯১টি আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে ১২ হাজার ৮৯টি নমুনা সংগ্রহ ও ১২ হাজার ৪৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হলো ১৫ লাখ ৫০ হাজার ২০৩টি। গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের এবং বাড়িতে একজনের। এদের মধ্যে ২০ বছরের বেশি বয়সী একজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ছয়জন এবং ষাটোর্ধ্ব ২০ জন ছিলেন। ঢাকা বিভাগের ছিলেন ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের চারজন, রাজশাহী বিভাগের পাঁচজন, খুলনা বিভাগের একজন, বরিশাল বিভাগের একজন এবং রংপুর বিভাগের ছিলেন একজন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ। রোগী শনাক্ত তুলনায় সুস্থতার হার ৬৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত করোনায় মৃতদের মধ্যে পুরুষ তিন হাজার ৩৬৪ জন (৭৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ) এবং নারী ৯১৭ জন (২১ দশমিক ৪২ শতাংশ)। গত রোববারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪২ জন মারা গেছেন। ১১ হাজার ৯৩৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা মিলেছে আরও এক হাজার ৮৯৭ জনের দেহে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড চার হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে।
ঢাকা-চট্টগ্রামে রোগী বেশি হলেও শয্যা খালি ৬৯ শতাংশ: রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য রাজধানী ঢাকায় ২১টি এবং চট্টগ্রামে ৯টি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল রয়েছে। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামে হাসপাতালগুলোর সাধারণ ও আইসিইউয়ের ৬৮ দশমিক ৫০ অর্থাৎ প্রায় ৬৯ শতাংশ শয্যাই খালি। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, রাজধানীর ২১টি করোনা হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৬২৫ এবং আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল সাধারণ শয্যায় ২ হাজার ৯২ এবং আইসিইউয়ে ১৮৫ জন। সাধারণ শয্যায় ৪ হাজার ৫৩৩টি এবং আইসিইউতে ১২৫টি শয্যা খালি ছিল। রাজধানীর যেসব হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে সেগুলো হলো- কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ইউনিট-২) ও বার্ন ইউনিট, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল বাবুবাজার, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল মহাখালী, লালকুঠি হাসপাতাল মিরপুর, আড়াইশো শয্যা শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল , আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বসুন্ধরা হাসপাতাল, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল ফুলবাড়িয়া, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আজগর আলী হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, এভারকেয়ার হাসপাতাল ও ইমপালস হাসপাতাল। অপরদিকে চট্টগ্রামের ৯টি করোনা হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২ এবং আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল সাধারণ শয্যায় ১৪০ এবং আইসিইউয়ে ১৮৫ জন। সাধারণ শয্যায় ৬৪২টি এবং আইসিইউতে ২৬টিসজ্জা খালি ছিল।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ৫৪ লাখ প্রায়। মৃতের সংখ্যা সাড়ে আট লাখের বেশি। তবে এক কোটি ৭৭ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।