ওসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা রেকর্ড

0
432

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আদালতের নির্দেশে খুলনা রেলওয়ে (জিআরপি) থানার সাময়িক বরখাস্তকৃত (সাসপেন্ড) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উছমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা রেকর্ড হয়েছে। বুধবার বিকেলে জিআরপি থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এ মামলা তদন্তের জন্য আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) পাঠানো হবে বলে জিআরপি থানা পুলিশ জানিয়েছে।
ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ ধর্ষণ মামলা দায়েরের আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন আমলে নিয়ে পরে খুলনা জিআরপি থানায় মামলা রেকর্ড ও পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে বুধবার মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলায় ওসি উছমান গণি পাঠান, ঘটনার রাতের ডিউটি অফিসার (মুখে বসন্তের দাগ আছে) ও থানার তিন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। তবে ওসি ছাড়া অন্যদের নাম নেই।
মামলার আরজিতে বাদী উলে¬খ করেন, ২ আগস্ট যশোর থেকে ট্রেনে খুলনায় আসার পথে রেলওয়ে পুলিশের সদস্যরা কোনো কারণ ছাড়াই তাকে আটক করেন। এরপর রাতে ওসি লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করেন। রাত দেড়টার দিকে ওসি চোখ বেঁধে তাকে থানার একটি কক্ষে নিয়ে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টায় তাকে তিনবার ওসি ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের সময় ওসি কনডম ব্যবহার করেন।
ওসি ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ডিউটি অফিসার একইভাবে কনডম ব্যবহার করে তাকে ধর্ষণ করেন। ডিউটি অফিসারের পর তিন কনস্টেবল পর্যায়ক্রমে ওই কক্ষে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। সবাই কনডম ব্যবহার করেন। পরদিন ৩ আগস্ট তাকে ৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ৪ আগস্ট ওই নারী খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। এছাড়া তাকে মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং তার মেডিকেল পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে গত ৫ আগস্ট তার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
ওই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ আগস্ট খুলনা জিআরপি থানার ওসি উছমান গণি পাঠান ও এএসআই নাজমুল হককে পাকশী রেলওয়ে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়। পরে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশে গত ৯ আগস্ট ভুক্তভোগী নারী খুলনা জিআরপি থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৩ সালের ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের’ ১৫ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এর গত ২৮ আগস্ট খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে মাদক মামলায় জামিনে মুক্ত হন ভুক্তভোগী নারী।