ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে: খুলনায় মির্জা ফখরুল

0
820

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছে। সব মিলিয়ে দেশে আজ ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে আওয়ামী লীগ যে অন্যায় করেছে তা দেশের জনগণ কোনো দিনও মেনে নেবে না। এজন্য জনগণের কাছে আওয়ামী লীগকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এমন দেশে বাস করছি যেখানে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। দিনে-দুপুরে আদালতের মধ্যেই কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, পিটিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে। এসবই হচ্ছে সরকারের মদদে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার দেশবিরোধী বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রিয়া সাহার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। সেই সুযোগে তিনি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, তার বক্তব্যই না-কি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। দেশবাসী জানতে চায়, আসলেই এটা প্রিয়া সাহার বক্তব্য না-কি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে তা গরিব মারার বাজেট। এ বাজেটে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করে গরিবকে আরও গরিব করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। খুলনার পাটকল শ্রমিকদের মজুরি কমিশনসহ অন্য দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাই, মসিউর রহমান, সৈয়দ মেহেদী আহামেদ রুমী, কবির মুরাদ, যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মানবাধিকার সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সহ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান খান বাবু, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সহ-ধর্ম সম্পাদক অমলিন্দু অপু, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক নেওয়াজ হালিমা আরলি প্রমুখ।
অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মহিলা দল সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, তাঁতী দল সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহবায়ক এ কে এম ওয়াজেদ।
বিভাগের বিএনপি নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলার সভাপতি এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা, যশোর জেলার আহবায়ক অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম, বাগেরহাট জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাতক্ষীরা জেলার আহবায়ক রহমতউল্লাহ পলাশ, নড়াইল জেলা সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, মেহেরপুর জেলার সভাপতি মাসুদ অরুন, মাগুরা জেলা সভাপতি আকতার হোসেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খুলনা থেকে রকিবুল ইসলাম বকুল, যশোর থেকে মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কুষ্টিয়ার রেজা আহমেদ বাচ্চু, সাতক্ষীরার ডাঃ শহিদুল আলম, যশোরের আবুল হোসেন আজাদ ও ইঞ্জিনিয়ার টি এস আইয়ুব, মেহেরপুরের জাভেদ মাসুদ মিল্টন, ঝিনাইদহের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মাগুরার মনোয়ার হোসেন খান, কুষ্টিয়ার ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন, ঝিনাইদহের এ্যাড. এম এ মজিদ, চুয়াডাঙ্গার মোঃ শরিফুজ্জামান।
খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগরের সিনিয়র সহ সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, জেলার সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ গাজী আব্দুল হক ও নগরের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম।
সমাবেশ পরিচালনা করেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি ও জেলার সাধারণ সম্পাদত আমীর এজাজ খান।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। কোরআন তেলাওয়াত করেন ওলামা দল মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ শফিকুল ইসলাম। এরপর জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের শিল্পীরা দলীয় ও দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করেন।