উৎপাদনে ফিরেছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো

0
262

নিজস্ব প্রতিবেদক:
১১ দফা দাবিতে রাজপথে টানা ৫দিন অনশন কর্মসূচি পালনের পর শনিবার কাজে যোগ দিয়েছেন খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা। পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রতিশ্রুতিতে শ্রমিকরা ভোর ৬টায় স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগ দিয়ে মিলের উৎপাদন শুরু করে। তবে শেষ পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে কি, হবেনা এই নিয়ে শ্রমিকরা আতংকে রয়েছে। শ্রমিকদের আন্দোলনে মিলের চাকা বন্ধ থাকায় প্রায় ৫ কোটি টাকার উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন। এদিকে গত বৃহস্পতিবার পাটমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর গতকাল সকালে খুলনায় গেট সভা করেছে শ্রমিক নেতারা।
শনিবার ঘড়ির কাটায় যখন ভোর পৌনে ৬টা ঠিক তখনই এক যোগে হুইসেল বাজে খালিশপুর শিল্প এলাকার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, দিঘলিয়ার ষ্টার, আটরা এলাকার আলীম, ইষ্টার্ন ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার জেজেআই, কার্পেটিং জুট মিলে। বাঁশির শব্দ শুনে স্ব স্ব মিলের মূল ফটক দিয়ে ঢুকতে থাকে শ্রমিকরা। ফ্যাক্টরীর মধ্যে যেয়ে নিজ কর্মস্থলে কাজ শুরু করে। মেশিনের খট খট শব্দে মুখরিত হয় গোটা শিল্পাঞ্চল এলাকা। মিলের চাকা চালু হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে দেখা যায় আনন্দের ছাপ। তবে পাটমন্ত্রী গোলম দস্তগীর গাজীর প্রতিশ্রুতিতে শ্রমিকরা বুক ভরা আশা নিয়ে টানা ৫দিন পর কাজে ফিরলেও তাদের মধ্যে এখনো আতংক কাটেনি।
শ্রমিকরা বলছেন, দীর্ঘ একবছর ধরে রাজপথে আন্দোলন করছি। শ্রমিক আন্দোলনের গতি থামিয়ে দিতে বহুবার খুলনা জেলা প্রশাসক, শ্রম ও কার্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং বিজেএমসির চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন, প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এমনকি ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য লিখিত চুক্তিও করেছেন। এ পর্যন্ত কোন চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। কোন প্রতিশ্রুতি, আশ্বাস রক্ষা করা হয়নি। তাই বর্তমানে খুলনা-যশোর অঞ্চলের শ্রমিকরা অনেক আশা করে উৎপাদন শুরু করলেও তাদের মধ্যে আতংক কাটেছে না বলেও জানান তারা।
এদিকে খুলনায় ফিরে শ্রমিক সমাবেশ করেছেন শ্রমিক নেতারা। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভিন্ন সময় ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপর, ষ্টার, আলীম, ইষ্টার্ন, জেজেআাই ও কার্পেটিং জুট মিল গেটে পৃথক সমাবেশ করে সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ।
এ সমাবেশে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আঃ হামিদ সরদার, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মুরাদ হোসনে, মোঃ সোহরাব হোসেন, সাহানা শারমিন, হুমায়ুন কবির খান, মোঃ দ্বীন ইসলাম, মোঃ হারুন আর রশিদ মল্লিক, সাইফুল ইসলাম লিঠু, মোঃ আলাউদ্দীন, মোঃ ইয়াজদানী, শ্রমিকলীগ নেতা মাওঃ হেমায়েত উদ্দীন আজাদী, আবু দাউদ দ্বীন মোহাম্মদ ও শেখ মোঃ ইব্রাহীম, সাইফুল ইসলাম লিঠু, নেতা কাওসার আলী মৃধা, মোঃ খলিলুর রহমান, সেলিম আকন, সেলিম শিকদার,মনিরুল ইসলাম শিকদার, মোঃ আবু হানিফ, সাহাজান সিরাজ মোঃ তরিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান ও মিন্টু মিয়া, ষ্টার জুট মিলের বেল্লাল মল্লিক, আব্দুল মান্নান. মাসুম গাজী,আবু হানিফ, তবিবর রহমান, আলমগীর হোসেন, সিরাজুল ইসলাম লিয়াকত হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে মজুরী কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুর ২টায় খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা রাজপথে অনশন শুরু করে। আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের সাথে গত বৃহস্পতিবার বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর অনশন ভঙ্গ করেন প্রায় অর্ধ লাখ শ্রমিক।