ঈদের পর টানা আন্দোলনে নামছে খুলনার নয় রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের শ্রমিকরা

0
966

এম জে ফরাজী : মজুরী কমিশন বাস্তবায়নের ইস্যুতে খুলনার পাটকল শ্রমিকরা আবারো আন্দোলনে নামছে। মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া মজুরী, পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্ধসহ ৬ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯ পাটকলের শ্রমিকরা আন্দোলন কর্মসুচির ঘোষনা করেছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের আহবানে ৯ পাটকলে শ্রমিকরা মজুরী কমিশন ইস্যুটি সামনে রেখে রাজপথ, রেলপথ অবরোধ, কফিন মিছিলসহ টানা ১৬ দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শ্রমিক নেতারা।
আন্দোলন কর্মসুচির মধ্যে ৯ সেপ্টেম্বর সকল পাটকলে একযোগে গেট সভা, ১০ সেপ্টেম্বর বিজেএমসির অস্থায়ী কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় শ্রমিক নেতাদের সাথে আলোচনা সভা, ১২ সেপ্টেম্বর মিল গুলোর পালা বদলে বিক্ষোভ মিছিল, ১৩ সেপ্টেম্বর রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল, ১৪ সেপ্টেম্বর পিপলস গোল চত্বরে শ্রমিক জনসভা, ১৬ সেপ্টেম্বর পাট পি অধ্যুষিত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান, ১৮ সেপ্টেম্বর লাল পতাকা মিছিল, ২০ সেপ্টেম্বর রাজপথে লাঠি মিছিল, ২১ সেপ্টেম্বর এক সাথে নরসিংদী ও খালিশপুরে শ্রমিক সমাবেশ, ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জুট মিলের সামনে গেট সভা ও শ্রমিক বিক্ষোভ, ২৩ সেপ্টেম্বর হাফিজুট মিলে সারা দেশের পাটকল শ্রমিক নেতাদের বৈঠক, ২৪ সেপ্টেম্বর আমিন জুট মিলে একই কর্মসুচি, ২৭ সেপ্টেম্বর রাজপথে কফিন মিছিল, ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৮ থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত রাজপথ, রেলপথ অবরোধ, ২ অক্টোবর আবারো রাজপথ রেলপথ অবরোধ, ৫ অক্টোবর পিপলস গোল চত্বরে শ্রমিক জণসভা ও পরবর্তি কর্মসূচি ঘোষনা করবে।
কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে রবিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় প্রত্যেকটি পাটকলের সামনে শ্রমিক সমাবেশ আয়েজন করে মিলগুলির সিবিএ-নন সিবএ শ্রমিক নেতারা। সমাবেশে শ্রমিকদের কর্মসূচি পালন করতে নির্দেশ প্রদান করে শ্রমিক নেতারা। আন্দোলন কর্মসুচির দাবী নামা বস্ত্র ও পাটমন্ত্রনালয়, বিজেএমসিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের কার্যকরি আহবায়ক মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে মজুরী কমিশন ঘোষনার দাবীতে পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছে। সে সময় ১১ দফা দাবী নিয়ে খুলনা যশোর অঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক যুগপৎ আন্দোলন করলেও প্রধান দাবী ছিল মজুরী কমিশন বোর্ড গঠন করে তার ঘোষনা করা।
এছাড়া অন্যান্য দাবীর মধ্যে, পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্ধ, বদলী শ্রমিক স্থায়ী করণ, খালিশপুর ও দৌলতপুর মিলের শ্রমিকদের মজুরী বৈষম্য দুর করে বিজেএমসির অন্যান্য মিলের ন্যায় সুযোগ সুবিধা প্রদান, অবসর প্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ, গ্রাচ্যুইটিসহ সকল পাওনা অর্থ পরিশোধসহ ১১ দফা দাবীতে শ্রমিকরা আন্দোলন করেছে। বর্তমানে ৬ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের ডাকে দেশের সকল পাটকলের সিবিএ-নন সিবিএ নেতারা এক হয়ে গত ৮ আগষ্ট ঢাকায় বৈঠক করেছেন। বৈঠকের সিদ্ধান্তর পর বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী এবং বিজেএমসির চেয়ারম্যানের সাথে শ্রমিক নেতারা বৈঠক করেছেন। সেখানে তাদের মজুরী কমিশন, জাতীয় করন বিল-২০১৮ বতিল, বকেয়া বেতন মজুরীসহ ৬ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুপারিশ করেছেন। আগামী ১ মাসের মধ্যে উত্থাপতি ৬ দফার কোন সুরাহ না হলে শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা তাদের জানানো হয়েছে বলে সোহরাব হোসেন জানান।