ইভিএম’এ খুলনা-২; লড়াই হবে জুয়েল বনাম মঞ্জু

0
1139

এস মোর্শেদঃ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে যে ছয়টি আসন ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম( ই ভি এম) এর আওতাভুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন, তার মধ্য খুলনা দুই আসন অন্যতম।

বাংলাদেশে এর আগে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে৷ তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারই প্রথম ইভিএম ব্যবহার করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন৷
গত (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও-এ অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে লটারির মাধ্যমে অন্য আসনের সঙ্গে খুলনা দুই নির্বাচনী আসনেও ইভিএম ব্যাবস্থা বেছে নেওয়া হয়।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সোনাডাঙ্গার ৭ টি ও সদর থানাধীন ৯ টি ওয়ার্ড মিলে খুলনা-২ নির্বাচনী আসন।
নিক’র মতে ইভিএম এর আওতাভুক্ত অন্য আসন গুলোর মত খুলনা ছয় আসনের সবগুলা কেন্দ্রেই থাকবে ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যাবস্থা বা ইভিএম সিস্টেম।

এবারের খুলনা দুই আসনে সর্বোমোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৭ টি।অর্থাৎ এই ১৫৭ টি কেন্দ্রেই থাকছে না কোন ব্যালট আর ব্যালট বাক্স।ইলেকট্রনিক ভোটিং এর মাধ্যমে ভোটাররা তাদের ভোট প্রদান করেই পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করবেন।সব মিলিয়ে খুলনা-২ আসনে ১৫৭ টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ৬৫৩ টি কক্ষে চলবে ইভিএম ভোটিং ব্যাবস্থা।খুলনা দুই আসনে ইভিএম এর আওতাভুক্ত ভোটার সংখ্যা ২লক্ষ ৯৪ হাজার ৬২ জন।
এর মধ্য পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮৮৯ এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩৭৩ জন ভোটার ইলেকট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে খুলনা দুই দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন, খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) এই আসনে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রার্থী হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল।অন্যদিকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।তাই জনমত বলছে এই আসনে লড়াই হবে সমানে সমান।

দুই দলের সূত্রমতে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালের পর গত ৪১ বছরে আর কখনো খুলনা-২ আসনে নৌকায় পাল তুলতে  পারেনি আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী। যে কারণে খুলনা-২ আসনটি বিএনপির একছত্র আধিপত্য হিসেবে খ্যাতি রয়েছে। ৪১ বছর পর গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতির সুযোগে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান এই আসনে এখানে এমপি নির্বাচিত হন।তাই দীর্ঘদিন পর ফিরে পাওয়া এ আসন পুনরুদ্ধারের জন্য মরিয়া তৃনমূল আওয়ামী লীগ সহ কেন্দ্রের নীতিনির্ধারকেরা। আর ক্লিন ইমেজ এবং নতুনত্বের চমকে বর্তমান সাংসদকে পিছনে ফেলেই এ আসনে মনোনয়ন ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ।

অপরদিকে ৪১ বছর ধরে দখলে থাকা আসনটি পুনরায় ফিরে পেতে চায় খুলনা বিএনপি।বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে মহানগর বিএনপি সভাপতি ছাড়াও  বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু।দলীয় বিশ্বস্ততায় খুলনা দুই আসনে বিএনপির নির্ভর‍যোগ্য একমাত্র প্রার্থী তিনি।

অন্যদিকে,ইভিএম নিয়ে নানান বিতর্ক থাকলেও এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে, নির্বাচন কমিশনের সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেলেও৷ ইভিএম কে নিয়ে খুলনায় জনমানুষের মনে নানান বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, কেউ এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিলেও অনেকের কৌতূহল রয়ে গেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ছাত্রী মেহবুবা ইয়াসমিন মেঘলা বলেন ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট দেওয়ায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।এখানে কোন ব্যালটপেপারের, সিলের কারবার নাই।আমরা তরুন প্রজন্ম আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলবো এটাই স্বাভাবিক। আশাকরি ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ভোট প্রদান আরো সচ্ছ হবে।

মো মাহবুবুল আলম নামে খুলনা-২ আসনে বসবাসরত একজন সরকারী ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট কতটা যুক্তিযুক্ত জানিনা।টিভিতে দেখলাম লটারীর মাধ্যমে খুলনা-৬ আসনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন হবে।এর আগে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেই নাই, তাই এইবার ইভিএম নিয়ে কৌতুহল কাজ করছে।আশাকরি সুষ্ঠ ও সুন্দর একটি নির্বাচন হবে।