আ. লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আগামীর পথযাত্রা শুভ হোক সরকার ও দলের চ্যালেঞ্জের বছর

0
268

বিদায় নিয়েছে ২০১৯। চলছে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ। বছরের তৃতীয় দিন অর্থাৎ আগামীকাল ৩ জানুয়ারি যৌথসভা শেষে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটি। দলটির নেতৃত্বে টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে বর্তমান সরকার। আমরা মনে করি, নতুন বছরের শুরু থেকেই সরকার ও আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও এখনো শেষ হয়নি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সদ্য সমাপ্ত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হওয়া শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত রাখা, অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করা, জেলা-উপজেলায় বিতর্কমুক্ত নেতৃত্ব গঠন, তৃণমূল পর্যায়ে সৃষ্ট এমপিবলয় ভেঙে দেয়া, ঢাকা ও চট্টগাম সিটি নির্বাচনে স্বাভাবিক বিজয় অর্জন ছাড়াও বিএনপিসহ সরকারবিরোধী জোটের আন্দোলন মোকাবিলায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করা খুব সহজ হবে না বলে মনে হয়। বিশেষ করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে প্রায় দুই বছর কারাবাসে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে মুক্তির দাবিতে গত বছরের শেষের দিকে হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। সেসময় আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে ভিন্ন পরিবেশ তৈরির চেষ্টাও করেন তারা। নেত্রীকে মুক্তির দাবিতে নতুন বছরে নানামুখী তৎপরতাসহ বড় ধরনের আন্দোলনের ডাক দিতে পারে বিএনপি। সবমিলিয়ে শুরু হওয়া নতুন বছরে দলের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারেরও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্য পড়তে হবে বলে আমরা মনে করি।
একথা ঠিক, ক্ষমতার এ দীর্ঘ সময়ে দলের ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। নতুন বছরে পদার্পণের মধ্য দিয়ে একুশ শতকের প্রথম দুই দশকের পরিক্রমা শেষ হলো। বর্ষসংক্রান্তিতে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির হিসেব-নিকেশ যেমন থাকে, তেমনি থাকে নবউদ্যমে নবযাত্রার সংকল্পও। তাই অতীতের বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়নের সঙ্গে প্রয়োজন ভবিষ্যৎ যাত্রার রূপরেখাও। বাংলাদেশ আজ ইতিহাসের আরেক বাঁকে দাঁড়িয়ে। একাত্তরে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছর হতে চলল। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উদযাপন করবে বাংলাদেশ। তার আগে নতুন বছরেই আমরা উপনীত হয়েছি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে। আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস থেকেই সার্বজনিনভাবে শুরু হবে মুজিববর্ষ উদযাপনের কাউন্ট ডাউন। এ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জন্মশতবর্ষের শুরু থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে উদযাপিত হবে। ২০২২ সালে উদযাপিত হবে ভাষা আন্দোলনের ৭০তম বার্ষিকী। সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে ইতিহাসের অনন্য সব অধ্যায় উদযাপনের মধ্য দিয়ে পার হবে জাতি।
অতীতের ভুল-ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটি ও সরকারকে ভবিষ্যতের জন্য নবতর পথযাত্রা সূচনা করতে হবে। নতুন আশা নিয়ে সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের কামনা, আগামীর পথে দেশের শান্তিপ্রিয় সর্বসাধারণের এই যাত্রা শুভ হোক।