আশাশুনি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ

0
358

আশাশুনি প্রতিনিধি:
আশাশুনি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেসরকারি আমলের অধ্যক্ষের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি সংযুক্ত অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় গ্রহণ করে কলেজটিকে ধ্বংসের দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৭/১১/১৭ তাং আশাশুনি কলেজে এবং ৮/১১/১৭ তাং পরিবর্তন করে জয়পুরহাটে তাকে সংযুক্ত অধ্যক্ষ হিসাবে বদলী/পদায়ন করেন। কিন্তু তিনি তথ্য গোপন করে আশাশুনি কলেজে যোগদান করেন। যোগদান করেই তিনি দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করেন। ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের ভেন্যু হিসাবে কলেজের কক্ষ ব্যবহারের প্রস্তাবকে তিনি অনিহা প্রকাশ ও অর্থ দাবী করে তৎকালীন ইউএনও মহোদয়ের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরন করলে উপজেলা পরিষদের সভায় তার বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহীত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিড অব গিফটের শর্ত বা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেসরকারি কলেজের পুরনো প্যাড ব্যবহার (তথ্য লুকিয়ে) বেআইনী ভাবে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ফরোয়াডিং দিয়ে ৩ জন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করিয়েছেন। জাতীয়করণকৃত কলেজে আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতির বিধান থাকলেও নিঝেই আয়-ব্যয় পরিচালনা করেছেন। তিনি কলেজে যোগদানের আগে অনুষ্ঠিত জুন’১৭ সাময়িক ও আগষ্ট’১৭ নির্বাচনী পরীক্ষার সম্মানী গ্রহন করেছেন। অথচ তৎকালীন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের প্রাপ্যতা দেওয়া হয়নি। মার্চ’১৯ যোগদান করে তিনি অনুপস্থিতকালীন সময়ে ৮টি অনার্স বিভাগ, এইচএ্সসি, ডিগ্রী, বিএম শাখার বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত সাময়িক পরীক্ষা ফি, কেন্দ্র, ইনকোর্স. ব্যবস্থাপনা ফি বাবদ বিপুল পরিমান টাকা অবৈধভাবে গ্রহণ করেছেন্ এমনকি অনার্স বিভাগের পরীক্ষা কমিটির নিকট হতে ৪০% হারে টাকা নিজে গ্রহন করেছেন। এইচএসসি ও পাবলিক পরীক্ষার প্রাকটিক্যাল নম্বর দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিষয় প্রতি ১০০ টাকা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকচ থেকে বিনা রশিদে আদায় করেছেন। শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড বাবদ টাকা উত্তোলন করে নিম্নমানের কার্ড নিয়ে লাভবান হয়েছেন। কলেজে যোগদানের পর বিএনসিসি’র অফিস কক্ষটি নিজে বসবাসের জন্য ব্যবহার করলেও কোন ভাড়া প্রদান করেননি। অথচ তিনি বেতনের ৪০% বাসা ভাড়া বাবদ উত্তোলন করেন। এনিয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি ১ মাসের ভাড়া প্রদান করলেও পরবর্তীতে আর দেননি। এছাড়া কলেহ শিক্ষকদের নিকট থেকে প্রাইভেট পড়ানো বাবদ সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ১০% হারে টাকা আদায় করলেও সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়া, পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের প্রাপ্য সম্মানী না দেওয়াসহ বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষকরা যাতে উচ্চবাচ্য না করে সেজন্য শিক্ষকদের সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতিকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে নানা অপকৌশল অবলম্বনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি সামান্য বিষয় নিয়ে অভ্যান্তরিন ভাবে বা পারস্পরিক আলোচনা মাধ্যমে শুধরানোর ব্যবস্থা না করে শো-কজ করা থেকে শুরু করে অপপ্রচারের মাধ্যমে বিষয়কে বড় করে তুলে ধরে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্টের ঘটনা উদ্ভব করা হয়ে থাকে। এব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে আবেদনে কলেজটিকে রক্ষার জন্য কর্যকর পদক্ষেপ নিতে জোরদাবী জানান হয়েছে। এব্যাপারে কলেজেন অধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমানের সাথে মোবাইল কথা বললে তিনি জানান, অভিযোগের অনেকগুলো পুরনো। তদন্ত হয়ে গেছে। এখন শিক্ষার্থী ভর্তি চলছে, তাদেরকে সরকারি নয় আশাশুনি কলেজ লেখা ফরমে ভর্তি করা হচ্ছে। ৩ শিক্ষকের ফরওয়ার্ডিং আশাশুনি কলেজের প্যাডে করা হলেও নীচে আশাশুনি সরকারি কলেজ লেখা সীল ব্যবহার করা আছে। এটি নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। ৩/৪ জন ষড়যন্ত্র করে জাল স্বাক্ষরে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেছে। কলেজের নামে খাতওয়ারী একাউন্ট খোলা হয়েছে, সেখানে খাতওয়ারী পৃথক একাউন্ট হতে আয়-ব্যয় করা হয়ে থাকে। আগে একই একাউন্ট থেকে বহু খাতে ব্যয় করে অনিয়ম করা হয়েছে। আমি কাউকে চুরি করার সুযোগ দেইনি, দেবনা। এজন্য অনেকে নাখোশ। বিল্ডিং নির্মান, ভাঙ্গার কাজ ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের মাধ্যমে হচ্ছে, সেখানে আমাদের কোন হাত নেই। সুতরাং যে সব অভিযোগ করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। আমি প্রত্যেক অভিযোগের জবাব দিতে প্রস্তুত আছি।